দেশজুড়ে

প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস জাবি ছাত্রীর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সহপাঠীরা জানান, প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

Advertisement

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তার বন্ধুরা সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (৪৮তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা ও আমাদের করণীয়

Advertisement

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অর্ণব বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে। ইসিজি রিপোর্ট দেখে বুঝেছি, অন্তত আধা ঘণ্টা আগেই তার মৃত্যু হয়। এটা যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর আমরা মরদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেবো।

সহপাঠীরা জানান, খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহরিয়ার জামান তুর্য নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ৫০তম ব্যাচের জুনিয়রদের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। আত্মহত্যার বিষয়টি তুর্যই মুঠোফোনে তার সহপাঠীদের জানান। তখন তারা বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

আরও পড়ুন: ধর্ষণ থেকে বাঁচতে আত্মহত্যা প্রসঙ্গে ইসলাম কী বলে?

নিহতের রুমমেট মাইশা নুসরাত বলেন, ঘটনার সময় আমরা কেউ বাসায় ছিলাম না। সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তাকে তুর্যের সঙ্গে ভিডিও কলে ঝগড়া করতে দেখি। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার বান্ধবী সামিহাকে ফোন করে দ্রুত বাসায় যেতে বলেন তুর্য। তখন তারা বাসায় গিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

Advertisement

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিহতের এক সহপাঠী বলেন, তুর্যর সঙ্গে তার প্রায় ঝগড়া হতো।

এ বিষয়ে শাহরিয়ার জামান তুর্য বলেন, আমি ও সে ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। তেমন কোনো ঝামেলা না, তবে ছোট বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এটা নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। তখন ফোন কেটে যায়। আমি বারবার চেষ্টা করেও তাকে আর ফোনে পাইনি। তখন তার রুমমেট ও বন্ধুদের বিষয়টি জানাই।

আরও পড়ুন: মানুষ কেন আত্মহত্যা করে?

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, শিক্ষার্থীরা ফোন দিয়ে আমাকে জানায়, আশকা অসুস্থ। তাই আমি দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতে বলি। তবে তারা আমাকে আত্মহত্যার বিষয়টি জানায়নি। পরে আমি হাসপাতালে গিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পারি।

সাভার থানার দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক আল মামুন কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে জেনেছি। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে পরিবারকে মরদেহ বুঝিয়ে দিতে পারবো।

মাহবুব সরদার/জেডএইচ