যশোরের চৌগাছায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে গিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ পাঁচ ভুয়া পরীক্ষার্থী গ্রেফতার হয়েছেস। গ্রেফতাররা টাকার বিনিময়ে অন্যদের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। তারা যেসব পরীক্ষার্থীর হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
Advertisement
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এইচএসসি প্রোগ্রামের দ্বিতীয় বর্ষের ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার সময় চৌগাছা সরকারি কলেজ ও চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৫টায় পরীক্ষা শেষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে চৌগাছা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে শুক্রবার বিকেলে চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে সন্দেহ হলে পরীক্ষায় ম্যাজিস্ট্রেসি ডিউটিরত চৌগাছার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাদের চ্যালেঞ্জ করেন। এ সময় অনলাইনে যাচাই করে দেখা যায় চৌগাছা সরকারি কলেজের ২১০১১৩৯৫০২২ রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থী ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রায়চন্ডি গ্রামের গাজী মো. এমদাদুল হকের পরিবর্তে চৌগাছা উপজেলার আন্দারকোটা গ্রামের আল আমিন হোসেন, ২১০১১৩৯৫০১২ রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থী যশোর সদর উপজেলার তীরেরহাট গ্রামের মেহেদী হাসানের পরিবর্তে একই গ্রামের হাসান ইমাম এবং ২১০১১৩৯৫০২২ রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থী খুলনার ফুলতলা উপজেলার গিলাতলা গ্রামের শাহিনুর ইসলামের পরিবর্তে চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের আল আমিন হোসেন পরীক্ষা দিচ্ছেন।
এদিকে একই সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানার নির্দেশে চৌগাছা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে উপজেলার আরাজী সুলতানপুর-বকসীপুর-চাকলা-দেবীপুর (এবিসিডি) কলেজের পরীক্ষার্থী রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার শিরাইন কলোনীর মো. শাহিন বাপ্পির পরিবর্তে যবিপ্রবির শিক্ষার্থী চৌগাছার আন্দারকোটা গ্রামের মো. সজিব এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের মেহেদী আল মামুনের পরিবর্তে তার আপন ভাই মো. ইমরান পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়।
Advertisement
পরে পরীক্ষা শেষে তাদের বিরদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮০ এর ৩ ধারায় চৌগাছা থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী এবং তাদের পরিবর্তে পরীক্ষা দিতে আসা ভুয়া পরীক্ষার্থীদের আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম কবীর।
এ বিষয়ে চৌগাছার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস বলেন, একজন ভুয়া পরীক্ষার্থী বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে তিনতলার একটি বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় আমি নিজে তাকে আটক করি। ওই রোল নম্বরধারীদের বহিষ্কার করা হয়েছে এবং ভুয়া পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ভুয়া পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮০ এর ৩ ধারায় চৌগাছা থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, কেন্দ্র সচিবদের করা মামলায় ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের শনিবার যশোর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
Advertisement
মিলন রহমান/এফএ/এএসএম