বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্যোগে ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ’র প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আয়োজকরা আশা করছেন, শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঢল নামবে, যা তাদের কাঙ্ক্ষিত সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশের প্রত্যাশা পূর্ণ করবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল ঘুরে আয়োজনের প্রস্তুতি দেখা যায়। দুপুর সাড়ে ১২টায় করা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ প্রত্যাশার কথা জানান ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন>> ছাত্রলীগের ‘ছাত্রসমাবেশে’ বন্ধ থাকবে ঢাকার যেসব সড়ক
সরেজমিনে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় সমাবেশস্থলের আয়োজন শেষ দিকে। টুকটাক সাজানোর কাজ চলছে। প্রবেশপথের ফটকগুলো এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কয়েকটি টিম নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রস্তুত করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সমাবেশস্থলে জনসমাগম ও প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় পুলিশকে।
Advertisement
এদিকে ছাত্রলীগের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন। আমাদের প্রস্তুতি এ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এ ঐতিহাসিক ছাত্রসমাবেশের প্রস্তুতি দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইল ছুঁয়ে গিয়েছে। দেশের ৫ কোটি শিক্ষার্থীকে ছুঁয়ে গেছে। আমাদের স্বপ্নের নিরাপত্তার জন্য, দেশের নিরাপত্তার জন্য, আমাদের উন্নত ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য এ ছাত্রসমাবেশে সামিল হবেন শিক্ষার্থীরা।’
আরও পড়ুন>> শেখ হাসিনাকে ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ উপহার দিতে শপথ নেবে ছাত্রলীগ
তিনি আরও বলেন, ‘সমাবেশে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত যতজন আসবে। তার থেকে কয়েকগুণ বেশি আসবে যারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। শুধু শেখ হাসিনাকে ভালোবেসে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি গভীর দরদ অনুভব করে, জাতির জনকের সন্তান হিসেবে এ দেশের সুনাগরিক হওয়ার জন্য এ ছাত্রসমাবেশে সামিল হবে।’
সমাবেশে অন্য কোনো সংগঠনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা সব ছাত্রসংগঠনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি এ অনুষ্ঠানে। যারা এদেশের যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গেয়েছে, এদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষে যারা সাফাই গেয়েছে এবং যারা সামরিক স্বৈরশাসকের সেবাদাসের ভূমিকা পালন করেছে তাদের ব্যাতিত সব সংগঠনকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’
Advertisement
আরও পড়ুন>> প্রস্তুতি নেই রাবি ছাত্রলীগের, আগ্রহ হারাচ্ছেন নেতাকর্মীরা
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আগামীকালকের সমাবেশ রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অবিশ্বাস্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ ছাত্রসমাবেশের মধ্যদিয়ে গোটা দেশকে এ বার্তা দিতে চাই যে আমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, জাতির জনকের আদর্শে বলিয়ান থাকবো একই সঙ্গে খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিদের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করার কোনো জায়গা ছাত্রসমাজে নেই। শেখ হাসিনার প্রতি এদেশের সব শিক্ষার্থীদের যে ভালোবাসা রয়েছে, গভীর ভাবাবেগ রয়েছে সেটির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে আমরা এ ছাত্রসমাবেশ করবো। এটি ছাত্রলীগের সমাবেশে সীমাবদ্ধ নেই, এটি দেশের পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর একটি প্রতীকী ছাত্রসমাবেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস আগামী নির্বাচনে এ তরুণদের শক্তির ওপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ ব্যালট বিপ্লবে বিজয়ী হতে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ছাত্রসমাজ আপসহীন জায়গায় রয়েছে।’
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, সারাদেশের শিক্ষার্থীরা, তরুণসমাজ আজকে একটি সুরে, একটি নামে ঐক্যবদ্ধ। সেটি হচ্ছে উন্নত, আধুনিক, স্বনির্ভর, সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তারা বিশ্বাস করেন শেখ হাসিনার এদেশের লাখো কোটি মানুষের দিনবদল করেছেন। আসন্ন ২০২৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও নৌকার কোনো বিকল্প নেই এ প্রশ্নে ছাত্রসমাজ, তরুণসমাজ আজকে এক এবং ঐক্যবদ্ধ। এ ছাত্রসমাবেশ থেকে সারাবিশ্বে আমরা একটি স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দিতে চাই যে তরুণসমাজ জাতির জনকের কন্যার সঙ্গে ছিল, আছে, থাকবে। শুক্রবারের সমাবেশে লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা উন্মুক্তভাবে শপথ নিতে চাই। দেশবিরোধী যেকোনো অপশক্তির অপতৎপরতাকে রুখে দিতে এদেশের তারুণ্য সদাপ্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন>> রংপুরে ছাত্রলীগের ১৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
এএসবিডি/এমএএইচ/জেআইএম