বালকাঠি জেলা কারাগারের কারাধ্যক্ষ (জেলার) আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে নারী দর্শনার্থীকে (২৪) কুপ্রস্তাব ও অশালীন আচরণের অভিযোগে কারা মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বরিশালের ডিআইজি প্রিজন ও ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওই নারী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী গত ২৯ জুলাই থেকে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে আছেন। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য বারবার জেল গেটে গেলেও দেখা করতে পারেননি। পরে জেলের এক কর্মচারীর পরামর্শে জেলার আক্তার হোসেন শেখের সরকারি নম্বরে ৩০ জুলাই ফোন করে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি জানান। পরবর্তী সময়ে জেলার স্বামীর সঙ্গে দেখার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়ে ওই নারীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর চেয়ে নেন। পরে ব্যক্তিগত নম্বর থেকে তাকে নিয়মিত ফোন করে কথা বলতে থাকেন।
এরপর স্বামীর সঙ্গে দেখা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ওই নারীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিও কল দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন জেলার এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে ওই নারীর নলছিটির বাড়িতে গিয়ে একসঙ্গে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ওই নারী এতে রাজি না হওয়ায় তাকে আর তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তার স্বামীকে জেলের ভেতরে শাস্তি দেবেন বলে ভয়ভীতি দেখান জেলার।
Advertisement
এ বিষয়ে অভিযোগকারী নারী বলেন, ‘কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি জেলার আক্তার হোসেন। আমি আমার দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে জেল গেটে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থেকেছি। ওনার কুপ্রস্তাবের সব রেকর্ড আমার কাছে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাচ্চারা ওদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে না পেরে দিনরাত শুধু কান্নাকাটি করছে। আমার অসহায়ত্ব ও বিপদের সুযোগ নিয়ে জেলার আক্তার হোসেন আমার ইজ্জত নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার আক্তার হোসেন শেখ বলেন, ‘অভিযোগটি সত্য না। কারাগারের নিয়মানুযায়ী ১৫ দিন পর প্রত্যেকে একবার করে সাক্ষাৎ পাবেন। তবে তাকে (অভিযোগকারী নারী) প্রতিদিন সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ থাকে। সে বাড়তি সুযোগ না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছে।’
এ বিষয়ে ঝালকাঠির কারা তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি মং এছেন বলেন, ‘স্বামীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় জেলারের বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবর এক নারী অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’
Advertisement
আতিকুর রহমান/এসআর/জিকেএস