নাটোরের গুরুদাসপুরের একটি বিদ্যালয়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের ঘটনায় শিক্ষা অফিসারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
১৮ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবীকে আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী ড. মো বশির আহমেদ।
তিনি জানান, গুরুদাসপুর উপজেলায় শোক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে বরখাস্ত করার ঘটনায় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (৩০ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মুহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী বশির আহমেদ। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ওসমান গনি ও ব্যারিস্টার শাহীন রাজ।
আইনজীবী বশির জানান, এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ যুক্ত করে রিটটি করি। জয় বাংলা রাষ্ট্রীয় স্লোগান। এটা দেওয়ার কারণে কাউকে বরখাস্ত করা বেআইনি। তাই কেন তার বরখাস্তের আদেশ বেআইনি হবে না এই মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত। আর ১৮ আগস্ট ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে তলব করেছেন।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, শিক্ষা সচিব, নাটোর জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে এমপির নির্দেশে বরখাস্ত করে জেলা শিক্ষা অফিস।
Advertisement
গত ২২ আগস্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবী সই করা এক চিঠিতে সাময়িক এ বরখাস্ত করা হয়।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ. ম. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় এমপি আব্দুল কুদ্দুসের নির্দেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে মাসুদুর রহমানেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তিনি দোষ স্বীকার ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে ওই শিক্ষকের জবাবের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠানো হলে তিনি সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।
নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ গোলাম নবী বলেন, শিক্ষক মাসুদুর রহমান রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বলে নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন। এমপির নির্দেশ প্রথমে শোকজ এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত জবাবে উল্লেখ করেন, ১৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ও প্রস্তুতি সভা এবং একটি গণমিছিলে অংশ নেই। মিছিলে আমি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত নাগরিক হিসেবে স্লোগান দেই।
শিক্ষক মাসুদুর রহমান বলেন, শোক দিবসের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এবং নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আহম্মদ আলী মোল্লা। এমপি কুদ্দুসের প্রতিপক্ষ নেতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এফএইচ/জেডএইচ/জেআইএম