দেশজুড়ে

থাকেন নিজের বাড়িতে, লাকড়ি রাখেন আশ্রয়ণের ঘরে

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করেন না বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা। নিজেদের নামে ঘরগুলো বরাদ্দ নিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দখলে রেখেছেন তারা। ১৩টি ঘরের মধ্যে তিনটি পরিবার বসবাস করলেও ১০টি ঘরে শুরু থেকেই কেউ বাস করেন না।

Advertisement

খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বানা ইউনিয়নের পন্ডিতবানা গ্রামের নিশিতলা বাজার সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ১৩টি ঘর নির্মাণ ও উপকারভোগীদের মাঝে বরাদ্দ শেষে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু এই ১৩টি ঘরের মধ্যে ৩টি ঘরে তিনটি পরিবার বসবাস করে। ১০টি ঘরে শুরু থেকেই কেউ বসবাস করেননি। ঘরগুলো বুঝে নিয়ে তালাবদ্ধ করে চলে গেছেন তারা। আবার কোনো কোনো ঘর উন্মুক্ত অবস্থায় অযত্নে অবহেলায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এসব ঘরের বারান্দায় ময়লা-আবর্জনাও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ চন্দ্র সরকার বলেন, এখানে মোট ১৩টি ঘর আছে। আমরা তিনটি পরিবার বসবাস করি। অন্য ১০টি পরিবারের কাউকেই আমরা আজ পর্যন্ত দেখিনি। ঘর পেয়ে তালা মেরে চলে গেছে। আর কখনো আসেনি। কেউ থাকেও না। শুনেছি তাদের নিজেদের বাড়িতে থাকে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা খোকন মন্ডল বলেন, আমরা তিনটি পরিবার বসবাস করি। আমাদের চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। আরও দশটি পরিবারের লোকজন থাকলে আমাদের কাছেও ভালো লাগতো। পরিবেশটা ভালো হতো।

Advertisement

এ ব্যাপারে আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ পাওয়া সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশেই আমার বাড়ি। নিজের বাড়িতেই থাকি। যখন সরকারি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি তখন আমাদের বাড়িতে ভালো ঘর ছিল না। এখন বাড়িতে নতুন করে পাকা ঘর নির্মাণ করেছি, তাই নিজের বাড়িতেই থাকি। সরকারি ঘরে খড়কুটো, লাকড়িসহ বিভিন্ন মালপত্র রাখি।

সমীর কুমার বিশ্বাস বলেন, সরকারি ঘরে থাকা হয় না। তালা মেরে রেখেছি। মাঝেমধ্যে যাই, লোকজন নিয়ে আড্ডা দিয়ে আবার তালা দিয়ে চলে আসি। অন্য যারা থাকেন না তারা কৃষিপণ্য ও খড়কুটো রাখেন।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। তারপরও বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক বলেন, জানতে পেরেছি বিভিন্ন স্থানে অনেক ঘরেই বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা বসবাস করেন না। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন উপকারভোগীদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

Advertisement

এফএ/জেআইএম