গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিটার্ন দাখিল করেছে ৩৩ হাজার ৯০৫টি কোম্পানি। যা দেশের মোট কোম্পানি সংখ্যার হিসাবে ১২ শতাংশেরও (১১ দশমিক ৯৪) কম। তার মানে গত অর্থবছরে ৮৮ শতাংশেরও বেশি প্রতিষ্ঠান কর দেয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরজেএসি) হিসাব বলছে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত নিবন্ধিত পাবলিক ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সংখ্যা দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫৮টি। অথচ অল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান সরকারকে কর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদেশে স্থায়ী হতেও লাগবে কর সনদ
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পাওয়ার পর লাভ-লোকসান যা-ই হোক না কেন, আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, অনেক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিয়ে রাখলেও ব্যবসা শুরু করেনি। অনেক প্রতিষ্ঠান গড়িমসি করে রিটার্ন দেয় না। আবার অনেকেই ব্যবহার করছে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে। এসব কারণে প্রতিবছর বড় অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
Advertisement
বিদায়ী অর্থবছরে আয়কর থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয় এক লাখ ১৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।
৩৩ হাজার ৯০৫টি কোম্পানি রিটার্ন দাতাসহ ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রিটার্ন দাতার সংখ্যা ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ২৬৩ জন। বাকি ৩৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৮ জন ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা। গত অর্থবছরে রিটার্ন দাতা বেড়েছে প্রায় ১০ লাখ।
আরও পড়ুন>> সহজ হচ্ছে কোম্পানি রিটার্ন দাখিল, বিদেশে সম্পদ থাকলেই জরিমানা
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানি করদাতাদের কাছ থেকে কর আদায় করতে পারলে সহজেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হতো।
Advertisement
যদিও কোম্পানি সংশ্লিষ্টদের দাবি, করপোরেট করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে ডিজিটাল ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা দরকার। বর্তমানে করপোরেট করদাতাদের এক বছরের মধ্যে ২৬ ধরনের নথি জমা দিতে হয়, যা অনেক জটিল।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, করপোরেট ট্যাক্স রিটার্ন পরিশোধের নিয়ম নিয়ে রাজস্ব কর্মকর্তাদের আরও উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। তারা কেন সময়মত রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছে, তা নিয়ে এনবিআরের গবেষণা করা প্রয়োজন। রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজ করা, অটোমেশন বাস্তবায়ন এবং নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোকে ফলোআপ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ৪ বছরে ৬ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা
বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ২০ শতাংশ, তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, তালিকাবহির্ভূত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৪০ শতাংশ, মার্চেন্ট ব্যাংকের ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, সিগারেট কোম্পানির ৪৫ শতাংশ, তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরের ৪০ শতাংশ ও তালিকাবহির্ভূত মোবাইল অপারেটরের ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর বিদ্যমান আছে।
এসএম/এমকেআর/এএসএম