দেশজুড়ে

শিক্ষিকার বেতের আঘাতে এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে শিশু মেহেদীর

হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিক্ষিকার ছোড়া বেতের আঘাতে মেহেদী হাসান নামের এক শিশুশিক্ষার্থীর এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য চোখটিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ চোখটি নষ্ট হলে পুরোপরি অন্ধ হয়ে যাবে মেহেদী।

Advertisement

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকেও স্থায়ীভাবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মাওলা বলেন, তদন্তে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম শিশুটির যেন চিকিৎসা ব্যয় বহন করেন। কিন্তু তিনি সেটিও করেননি। আসলে আমাদের নির্দিষ্ট কোনো ফান্ডও নেই যে আমরা শিশুটিকে সাহায্য করতে পারি।

Advertisement

শিশুটির নানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবুল বাশার চৌধুরী বলেন, ‘শিশুটি আমার ভাতিজির ঘরের নাতি। আমি নিজে তাকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়েছি। ডাক্তার বলেছেন, আঘাতপ্রাপ্ত চোখটি রক্ষা করা সম্ভব নয়। চোখ একটির সঙ্গে আরেকটি কানেক্ট থাকে। তাই অন্য চোখটি রক্ষা করতে হলে চিকিৎসায় অন্তত ৬০ লাখ টাকা খরচ হবে। এ টাকা তার পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া শিশুটির চোখ রক্ষা করা তার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।’

শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোর্শেদা আক্তার প্রাক-প্রাথমিকের ছাত্র মেহেদি হাসানের (৪) দিকে একটি বেত ছুড়ে মারেন। এতে তার ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। মেহেদীকে দ্রুত ঢাকার আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। পরদিন (১৭ আগস্ট) সেখানে তার চোখে অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। চোখটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন অন্য চোখটিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম।

এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সই করা আদেশে শিক্ষিকা মোর্শেদা আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একইসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সানজিদা পারভিনকে অন্য একটি বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসআর/এএসএম

Advertisement