গিনেস বুক অব রেকর্ডের তালিকায় রয়েছে হাঁচি, ঢেকুর তোলার রেকর্ড। সম্প্রতি জোরে ঢেকুর তুলে গিনেস বুকে নাম লেখান যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা কিম্বার্লি উইন্টার। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের মতে, ব্লেন্ডার (৭০-৮৯ ডেসিবল), বৈদ্যুতিক হ্যান্ড ড্রিল (৯০-৯৫ ডেসিবল), এমনকি কিছু মোটরসাইকেলের (১০০-১১০ ডেসিবল) আওয়াজও হার মানবে কিম্বার্লির ঢেকুরের কাছে।
Advertisement
তবে হেঁচকি তুলে বিশ্বরেকর্ড করার কথা জানেন কি? হেঁচকি খুব সাধারণ একটি ব্যাপার। খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়।
আরও পড়ুন: টানা ৯৭৬ দিন হাঁচি দিয়ে বিশ্বরেকর্ড
এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে। তবে টানা ৬৮ বছরে একদিনও হেঁচকি ছাড়া থাকতে পারেননি চার্লস অসবর্ন।
Advertisement
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা চার্লস অসবর্ন টানা ৬৮ বছর এই সমস্যায় ভুগেছেন। একটি দিনও তিনি হেঁচকি ছাড়া কাটাতে পারেননি। চার্লস পেশায় ছিলেন একজন কৃষক। একদিন খামারের একটি শূকরের ওজন দেখছিলেন। ঠিক সেসময় শুরু হয় তার হেঁচকি ওঠা। যা থেমেছিল ৬৮ বছর পর।
শূকরটি উঁচু করার সময় চার্লস মাটিতে পড়ে যান এবং এরপর থেকেই তার হেঁচকির সমস্যা শুরু হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন পরে যাওয়ার কারণে তার মস্তিষ্কে একটি রক্তবাহী ধমনী ফেটে গিয়েছে। ১৯২২ সালে শুরু হওয়া হেঁচকি শেষ হয়েছিল ১৯৯০ সালে।
আরও পড়ুন: ৯০ বছর বয়সী বডিবিল্ডারের বিশ্বরেকর্ড
শুরুতে খুব বিরক্তিকর মনে হলেও ধীরে ধীরে এতে অভ্যস্ত হয়ে যান চার্লস। যখন এই সমস্যার শুরু তখন তিনি একেবারেই তরুণ। দুইবার বিয়ে করেছিলেন তিনি। সন্তান ছিল আটজন। পরিবারের সবাই চার্লসের এই হেঁচকিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল।
Advertisement
বিশেশজ্ঞরা বলেন চার্লস তার জীবনে ৪২০ মিলিয়নেরও বেশি বার হেঁচকি করেছেন। হেঁচকি থেকে তার সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতি ছিল মাত্র ৫০ ঘণ্টা। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো সে দিনে ও রাতে প্রতি মিনিটে ২০ থেকে ৪০ বার হেঁচকি দিতেন। তার ঘুম এবং খাওয়ার সময় বেশি সমস্যা হত এজন্য। ঠিকমতো ঘুমাতে পারতেন না এবং খাবারও খেতে পারতেন না।
ঘটনাটি ৯০ দশকের হলেও বিংশ শতাব্দীতে এসে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তাকে স্বীকৃতি দেয়। হেঁচকি দূর করতে চার্লস অনেক চিকিৎসা করেছেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। ১৯৯০ সালের একদিন হঠাৎ করেই তার হেঁচকি বন্ধ হয়ে যায়। যেভাবে হঠাৎ শুরু হয়েছিল।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড
কেএসকে/এএসএম