যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি এবং নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নাইজারের সামরিক সরকার। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসা সামরিক সরকারকে উৎখাতে পশ্চিম আফ্রিকান জোট ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটসের (ইকোওয়াস) পক্ষ থেকে সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দেওয়া হয়। এরপরেই পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
Advertisement
এদিকে ফরাসি দূতকে নাইজার ছাড়ার আলটিমেটাম দেওয়ার পরপরই তা প্রত্যাখ্যান করেছে প্যারিস। ফ্রান্স শুরু থেকেই বলে আসছে যে, তারা নাইজারের সামরিক সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা ছাড়বে না জান্তা, যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নাইজার
এদিকে সামরিক সরকারের এমন পদক্ষেপের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো ছাড়াও পশ্চিম আফ্রিকান ব্লক ইকোওয়াসের সঙ্গেও দেশটির সম্পর্কের অবনতি ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ বর্তমানে এই সংস্থার সভাপতিত্ব করছে নাইজেরিয়া।
Advertisement
প্যারিস বরাবরই ইকোওয়াসের আহ্বানকে সমর্থন দিয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে পুনর্বহাল করার ওপরই জোর দেওয়া হচ্ছে। গত ২৬ জুলাই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ২০২১ সালে নির্বাচনে জিতে নাইজারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ বাজোম। তিনি পশ্চিমাপন্থী হিসেবে বেশ পরিচিত।
নাইজারের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই এগিয়ে নিয়েছিলেন বাজোম। যুক্তরাষ্ট্র এবং একসময় নাইজারে উপনিবেশ স্থাপন করা ফ্রান্স এতদিন ধরে মোহাম্মদ বাজোমকে সরাসরি সহায়তা দিয়েছে।
নাইজারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশগুলোকে আলাদা আলাদা চিঠিতে ফ্রান্স জার্মানি, নাইজেরিয়ান এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে দেশটির জান্তা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফ্রান্স সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাদের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফ্রান্স সরকারের পদক্ষেপ ‘নাইজারের স্বার্থ বিরুদ্ধ’ বলেও উল্লেখ করা হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন: নাইজারে হামলার পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স: জান্তা বাহিনী
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বল প্রয়োগ করে ক্ষমতায় বসা কোনো সরকার এমন অনুরোধ করার ক্ষমতা রাখে না। কোনো রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ক্ষমতা শুধুমাত্র বৈধভাবে নির্বাচিত নাইজেরিয়ান কর্তৃপক্ষই করতে পারে।
নাইজারে ফ্রান্সের দেড় হাজার সেনা মোতায়েন আছে। কয়েক বছর ধরে এই সেনা সদস্যরা বিভিন্ন জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাজোম সরকারকে সহযোগিতা করেছে। নাইজারে যুক্তরাষ্ট্রেরও প্রায় এক হাজার সেনা মোতায়েন আছে।
টিটিএন