মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ ইনকরপোরেটেডের (এমটিএফই) প্রতারণার তথ্য দিতে আহ্বান জানিয়েছে পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। একই সঙ্গে এসব বিষয়ে সাধারণ জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
Advertisement
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এই তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।
তিনি বলেন, এমটিএফই অনলাইন বা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ডলার, শেয়ার বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচায় কানাডা ও দুবাই ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। এমটিএফই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো হয় এবং লেনদেন পরিচালনা করা হয়। নিজেদের ছায়া প্ল্যাটফর্মে ট্রেড করার সুযোগ দিয়ে এই অ্যাপ সম্প্রতি আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান আরও জানান, বাংলাদেশে কোনো অফিস না থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ঘরে বসে সহজে আয়ের পথ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। বিভিন্ন ভিডিও ও বিজ্ঞাপন দেখে ভুক্তভোগীরা আগ্রহী হন। সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হন একজন আরেকজনকে দেখে, এক্ষেত্রে রেফারেল বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কাজ করে। এমটিএফইও এমএলএম পদ্ধতিতে কাজ করেছে। বেশি লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ অ্যাপটিতে বিনিয়োগ করে। কিছু মানুষ অবশ্য লাভের অংশ পেয়েছে। তবে চূড়ান্ত বিচারে বিনিয়োগের সব অর্থই খোয়াতে হয় গ্রাহকদের। ঢাকাসহ বরিশাল, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং সাতক্ষীরায় প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সারাদেশে চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাহক এমটিএফই’র মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা খুইয়েছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, গুগল প্লেস্টোর থেকে যে কেউ এমটিএফই অ্যাপ ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারতেন। রেজিস্ট্রেশনের পর তাদের নিজস্ব ওয়ালেটে ট্রেড করার জন্য ডলার রাখতে হতো। ডলারের পরিমাণ অনুযায়ী তাদেরকে প্রতিনিয়ত প্রলোভন দিয়ে লাভের কথা বলা হতো। ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হবে— এমন কল্পিত মুনাফার কথাও বলা হতো।
আজাদ রহমান বলেন, রেজিস্ট্রেশনের জন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর জমা দিতে হয়েছে গ্রাহকদের। ভার্চুয়ালি ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ডলার কেনাবেচা করা হলেও লভ্যাংশ দেওয়া হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, শুধু এমটিএফই না, দেশে এখনো সক্রিয় আছে অনিবন্ধনকৃত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক এ ধরনের প্রতারক চক্র। যেখানে বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। অ্যাপস এবং অনলাইন ভিত্তিক যেকোনো ব্যবসায় বিনিয়োগকারীদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার দরকার।
সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজ টিম এ ব্যাপারে নজরদারি করছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা প্রতারক চক্রের তথ্য এবং অভিযোগ জানাতে সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Advertisement
যোগাযোগ করতে ফেসবুক পেজ- www.facebook.com/cpccidbdpolice, ইমেইল- cyber@police.gov.bd অথবা +8801320010148 ও 999 নম্বরে কল করতে বলা হয়েছে।
আরএসএম/কেএসআর/এএসএম