অর্থনীতি

বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে ডিম-পেঁয়াজ-রসুন

বাজারে ডিম ও পেঁয়াজের দাম আগে থেকেই বাড়তি। মাছ-মাংস কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। এবার বাড়তি দাম এসে ঠেকেছে মসলাজাত পণ্য রসুনে। বাড়তি দামে রসুন কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

Advertisement

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) মিরপুরের মুসলিম বাজার, ১১ নাম্বার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব পণ্যের পাশাপাশি রসুনের দামও এখন বেশি।

বেশ কয়েক মাস ধরে অস্থির মাছ, মাংসের বাজার, কাঁচাবাজার, এমনকি মসলাজাত পণ্যের বাজার। সম্প্রতি দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু হয়েছে তদারকি ও আমদানি। ভারত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। এরপরও নিয়ন্ত্রণে নেই পণ্যের কেনাবেচা।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বাজার ঘুরে দেখা গেলো, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে। মহল্লার কোনো কোনো দোকানদার ১০০ টাকাও রাখছেন। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

Advertisement

আরও পড়ুন> আরও ৯ দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি 

কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। মিরপুর ১২ নাম্বার এলাকার মতলব স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী রাইসুল ইসলাম বলেন, মাস দেড়েক আগেও রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২৫০ টাকায় এসেছে। গত দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানেই আমদানি করা রসুনের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়। দেশি রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। এই বিক্রেতা আরও বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও বেড়েছে। তদারকি-অভিযান শুরু হলে পণ্যটির দাম হয়তো কিছুটা কমবে।

বাজারে পেঁয়াজ, রসুনের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, দাম কমার পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ টাকায়। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতিকেজি ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাজারে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় খোলা চিনি পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

অন্যদিকে, কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাড়ছে আলুর দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটি, বৃষ্টি, পরিবহন সংকটের কারণে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। উল্টো কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

আরও পড়ুন> নভেম্বরেও ইলিশ পাওয়ার আশা 

কাঁচাবাজারের দামের কথা বলাই বাহুল্য। বাজারে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। প্রতি কেজি পটল, চিচিঙা, ছোট শসা, জালি কুমড়া এবং কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ঝিঙা, বরবটি, রান্না করার শসা, কচুর মুখী, করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। গোল বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ২০০ টাকায় এবং টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতি ডজন মুরগির ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। শাহজালাল ডিম ভাণ্ডারের বিক্রয় কর্মী মাজেদুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ পর ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আসছে। ১৮৫ টাকা ডজন হয়ে গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। তবে সামনের দিকে ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা কম। তিনি আরও জানান, ডজন বা খাঁচা ধরে ক্রেতাদের ডিম কেনার প্রবণতা কমেছে। ভাঙা ডিমও বিক্রি বেড়েছে।

মাংসের বাজারের চিত্রও অভিন্ন। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরু ও খাসির মাংস আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন> সরবরাহ বাড়ায় কমছে ইলিশের দাম 

মাছের বাজারেও নেই সুখবর। বাজারে বেড়েছে ইলিশের সরবরাহ তবে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে এখনও। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার টাকারও বেশি। আর ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায়। প্রতিকেজি রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তেলাপিয়ার কেজি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা, পাঙাশ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, চাষের কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে বিভিন্ন শাকের দাম কিছুটা স্থিতিশীল। ক্রেতারা বলছেন, শাকের আঁটির আকার ছোট হয়েছে। প্রতি আঁটি লাল, মুলা, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পুঁই, মিষ্টি কুমড়া, লাউ শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসএম/এসএনআর/জিকেএস