কৃষি ও প্রকৃতি

অসময়ে তরমুজ চাষে আড়াই মাসে মিলবে ফলন

তরমুজের মৌসুম শেষ হয়েছে আরও আগেই। তবে অসময়ে ভাসমান বেডে মাচা তৈরি করে ফলটি চাষে সাফল্যের দেখা পেয়েছে বরিশালের রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। বিগত ২ বছর যাবৎ গবেষণা করে বারি তরমুজ-১ ও বারি তরমুজ-২ চাষে সফল হয়েছেন তারা।

Advertisement

অল্প পরিসরে পানির ওপর ভাসমান বেডে বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করে সফল হওয়ার পর কৃষকদের এ তরমুজ চাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ করছেন তারা। বাণিজ্যিকভাকে এ জাতের তরমুজ চাষ হলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।

রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কচুরিপানায় ভরা পুকুর ও জলাশয়ে ভাসমান বেডে মাচা তৈরি করে অসময়ে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। মাচায় জাল দিয়ে মোড়ানো ব্যাগের ভেতরে ঝুলছে সবুজ-ডোরাকাটা রসালো তরমুজ।

আরও পড়ুন: সৌদি খেজুর চাষে সফল শিবগঞ্জের মোশাররফ 

Advertisement

কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, এ তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। মৌসুমি তরমুজের চেয়ে অসময়ে কচুরিপানা ও জলাশয়ের ওপর বেড দিয়ে মাচা তৈরি করে তরমুজ চাষে কোনো সার প্রয়োগ করতে হয় না। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে তরমুজের রোগবালাই কম হয়। কম পরিশ্রমে বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।

আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বারি তরমুজ-১ ও বারি তরমুজ-২ এর পরীক্ষামূলক চাষে আমরা সফল হই। জমিতে চাষ না করে ভাসমান বেডে চাষ হওয়ায় চাষিদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা কৃষকদের মাঝে এ তরমুজ চাষ ছড়িয়ে দিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছি।’

গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘মৌসুম ছাড়া অসময়ের এ তরমুজ চাষ উদ্ভাবনে আমরা সফল হয়েছি। বীজ বপনের আড়াই থেকে ৩ মাসের মধ্যেই এ তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। এ তরমুজ চাষে কোনো সার প্রয়োগ করতে হয় না। এ তরমুজ বিষমুক্ত হওয়ায় পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। অসময়ের এ নতুন জাতের তরমুজ চাষে চাষিরাও সফলতা অর্জন করতে পারবেন। তারা ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।’

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে টমেটো চাষ করে লাভবান উজ্জ্বল 

Advertisement

আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভাসমান কৃষি প্রকল্পের পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে আমরাই প্রথম ভাসমান বেডে অসময়ে বারি জাতের তরমুজ চাষ নিয়ে গবেষণা করেছি। ২ বছর গবেষণার পর পরীক্ষামূলক চাষের মাধ্যমে সফল হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে অনেক ডোবা-নালা আছে। যেখানে এ প্রযুক্তিতে তরমুজ চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন। রোপণের আড়াই থেকে ৩ মাসের মধ্যেই তরমুজ বিক্রি করা যায়। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্ভাবিত এ তরমুজ চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সভা-সেমিনারসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’

শাওন খান/এসইউ/জিকেএস