কুড়িগ্রামে চাকরির দেওয়ার কথা বলে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় মো. সফিকুর রহমান নুরুল আমীন নামে এক শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ভুক্তভোগীরা কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করার পর সম্প্রতি ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি উলিপুর উপজেলার বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
Advertisement
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের নামে ৮-৯ জন যুবকের কাছ থেকে মোট ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন নুরুল আমীন। পরে চাকরি না দিয়ে ভুক্তভোগী মো. জাহাঙ্গীর আলম, রঞ্জু মিয়া ও আলমগীরসহ অনেকের সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নেন ওই শিক্ষক। উপায়ান্তর না দেখে ভুক্তভোগীরা কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই কারাগারে পাঠানো হয় নুরুল আমীনকে।
এক বছর চার মাস জেল খাটার পর, মামলা মীমাংসার কথা বলে হাইকোর্ট থেকে দুই মাসের জামিন নিয়ে আসেন নুরুল আমীন। কিন্তু এবার সভাপতির সই জাল করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এদিকে, জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও মীমাংসা না করায় হাজিরা দিতে গেলে আবারও তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতে।
বর্তমানে নুরুল আমীন কারাগারে রয়েছেন। অন্যদিকে, চাকরি না পেয়ে হতাশা আর ঋণের বোঝা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
Advertisement
ভুক্তভোগী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সবাই বেকা ও দরিদ্র পরিবারের লোকজন। সহায়-সম্বল বিক্রি করে, ঋণ ও ধারদেনা করে ওই শিক্ষকের হাতে টাকা তুলে দিয়েছি। এখন আমরা টাকা ফেরত চাই। আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আদালতের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ করছি, সফিকুর রহমান নুরুল আমীনকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক। সেই সঙ্গে আদালতের মাধ্যমে আমাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছা. আফরোজা বেগম বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে চেকের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার মামলায় সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুর রহমান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম বলেন, বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুর রহমান নুরুল আমীন নানান অভিযোগ ও অনিয়মের দায়ে কারাগারে রয়েছেন। অর্থ কেলেঙ্কারি মামলার দায়ে যেহেতু তিনি কারাগারে রয়েছেন, সেহেতু আদালতই তার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
ফজলুল করিম ফারাজী/এসএএইচ
Advertisement