যদি বিশ্বের ইতিহাসের দিকে তাকাই, তবে দেখা যাবে যে কোনো একটি জাতিকে দমন ও নির্মূল করার জন্য দুটি অস্ত্র একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। একটি গণহত্যা, অপরটি ধর্ষণ। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদেরও আছে এক নির্মম ইতিহাস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসরা সেই নির্মমতার চিত্র এঁকেছিল।
Advertisement
একাত্তরে এ দেশের নারীদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পাশবিক নির্যাতন চালায়। সে সময় নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, নিগৃহীত নারীদের মধ্যে অনেকেরই জীবন প্রদীপ নিভে গিয়েছিল। আবার কেউ কেউ হয়েছেন সন্তানসম্ভবা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্যাতিতদের নামের পাশে ‘বীরাঙ্গনা’ বলে সম্মানিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘বলাকার পাখা দিয়ে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
ড. মুনতাসীর মামুন সেইসব বীরাঙ্গনাদের মর্মস্পর্শী গাঁথা তুলে ধরেছেন তার লেখনীর মাধ্যমে। প্রকাশিত-অপ্রকাশিত ৯০ জন বীরাঙ্গনার বয়ান সেখানে লিপিবদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের নির্মম ইতিহাস ফুটে উঠেছে তার ‘বীরাঙ্গনা ১৯৭১’ বইয়ে। সম্প্রতি চাঁদপুর সরকারি কলেজের মাঠে বইটির পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
বইটির পাঠকরা জানান, যুদ্ধ কখনো শান্তি বয়ে আনে না। নির্যাতনকারীরা ইতিহাসে ঘৃণিত হিসেবেই বিবেচিত হয়। মূলত কাপুরুষরাই অসহায় নারীকে ধর্ষণ করে। যুগে যুগে উল্টো তারাই কলঙ্কিত হয়। বীরেরা সব সময়ই সম্মানিত হন। ঘটনা যতই নির্মম হোক না কেন, জয় হয় সাহসী বীরের। বীরাঙ্গনারা আমাদের কাছে সেইসব সাহসী নারী। তাদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন: জীবনের যত গান: গীতিময় বীক্ষণ
বইটি পাঠের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তারা বলেন, ড. মুনতাসীর মামুনের বইটি পড়ছিলাম আর মনে হলো রক্ত টগবগিয়ে উঠছে। কতটা নরপশু হলে এমন ঘৃণিত কাজ করতে পেরেছিল পাকসেনা ও তাদের দোসররা। বীরাঙ্গনা ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। বইটিতে ফুটে উঠেছে নারীদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের চিত্র। সত্যি এটি মর্মান্তিক।
পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন কামরুল হাসান, অভ্রনীল অভি, মোনেম শাহরিয়ার, ফাতেমা তানজিন লরিন, আফরিন, আয়শা আক্তার, অভিলোধ, তানিয়া, কাকন, শুভ, মেহেদী হাসান, সিফাত, মো. হারিছ এবং আলামিন।
Advertisement
এসইউ/এমএস