ধর্ম

দরিদ্র শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীনকে জাকাত দেওয়া যাবে?

জাকাত ইসলামের পাঁচ রোকনের একটি। প্রত্যেক সম্পদশালী মুসলমানের অন্যতম ফরজ কর্তব্য হলো, প্রতি বছর তার বর্ধনশীল সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ দান করে দেওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন,

Advertisement

وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌআর তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত দাও এবং যে নেক আমল তোমরা নিজদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা করছ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা দেখেন। (সুরা বাকারা: ১১০)

ইসলামে জাকাত দেওয়ার কিছু নির্দিষ্ট খাত আছে। যে কোনো নেক কাজে খরচ করলে জাকাত আদায় হয় না। যেমন মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যয় করলে জাকাত আদায় হবে না। জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন,

اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌনিশ্চয়ই সাদকা হচ্ছে দরিদ্র ও অভাবীদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; তা বণ্টন করা যায় দাস আজাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তওবা: ৬০)

Advertisement

এই আয়াতে জাকাতের খাতসমূহের মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে দরিদ্র ও অভাবীদের কথা। আমাদের চারপাশে অভাবী ও ভিক্ষুকদের মধ্যে আমরা অনেক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে দেখি, অনেক পিতৃহীন বা দরিদ্র ঘরের শিশুও থাকে যারা অভাবী, জাকাতের টাকা কি তাদের দেওয়া যাবে?

এ প্রশ্নের উত্তর হলো, দরিদ্র শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীনকে সরাসরি জাকাতের টাকা দিলে জাকাত আদায় হবে না। কারণ শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে অক্ষম। তবে তাদের পক্ষ থেকে তাদের অভিভাবক যদি জাকাতের অর্থ গ্রহণ করেন, তাহলে জাকাত আদায় হয়ে যাবে।

কেউ যদি কোনো এতিম বা দরিদ্র শিশুর লালনপালনের দায়িত্ব নেন, তাহলে নিজের জাকাতের অর্থ তার ভরণপোষণে ব্যয় করতে পারবেন। জাকাতের টাকায় খাবার কিনে শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীনকে খাইয়ে দিলে, বা পোশাক কিনে পরার জন্য দিলেও জাকাত আদায় হবে।

যে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দরিদ্র শিশুদের পড়াশোনা বা লালন-পালনের দায়িত্ব নেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেন, তাদের কাছেও দরিদ্র শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের জন্য জাকাত দেওয়া যাবে।

Advertisement

ওএফএফ/জিকেএস