অনেকদিন পর পদ্মার ভয়াল রূপ দেখলো মানিকগঞ্জের হরিরামপুরবাসী। মাত্র ৩০ মিনিটে নদীতে বিলীন হয়ে গেলো ১২টি ঘরবাড়ি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে একটি স্কুলসহ আরও অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।
Advertisement
সোমবার (২১ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে হরিরামপুর উপজেলার ধূলশুড়া ইউনিয়নের আবিধারা ও ইসলামপুর এলাকায় এই ভাঙন দেখা দেয়। এতে মুহূর্তেই নিঃস্ব হয় ১২টি পরিবার। ঘরবাড়ির সঙ্গে নদীতে গেছে ধান, সরিষা ও ভুট্টাসহ মালামাল।
এছাড়া নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে ৪৬ নম্বর চর মকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরই মধ্যে বিদ্যালয়টির একটি পিলার পদ্মার ভাঙনের মুখে পড়েছে।
নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ইসলামপুর গ্রামের গৃহবধূ ময়না বেগম জানান, মাত্র ৩০ মিনিটে তার ঘরবাড়ি সব শেষ। পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে সব।
Advertisement
আবিধারা এলাকার হারুন ও সাগর জানান, নদীভাঙনে আবিধারা ও ইসলামপুর গ্রামের লিটনের ঘর, বাদলের তিনটি ঘর, রফিজ, কালামের বাড়ি, সেকেন্দারের দোকান, শাহিনের বাড়ি, আফজাল বিশ্বাস ও সিদ্দিক মেম্বারের বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ১২টি বাড়ির ঘর ও ধান, ভুট্টাসহ ফসল পদ্মায় তলিয়ে গেছে।
গৃহবধূ সালমা আক্তার বলেন, ‘রাইতে ভূমিকম্পের মতো সব শ্যাষ হইয়া গেছে। মাত্র আধা ঘণ্টার ব্যবধানে আমরা রাস্তার ফকির হইয়া গেলাম। স্বপ্নেও ভাবি নাই আমাগো এমন দশা হইবো।’
খবর পেয়ে রাতেই ভাঙনকবলিত এলাকায় ছুটে যান স্থানীয় ধূলশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ খান।
তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে ভূমিকম্প হচ্ছে। ৩০-৪০ মিনিটে ১২টা বাড়ি শেষ। স্কুলও যেকোনো সময় শেষ হয়ে যাবে। চোখের সামনে বাড়িগুলো শেষ হতে দেখেছি। সারারাত পদ্মার পাড়েই ছিলাম।
Advertisement
এদিকে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তাপসী রাবেয়া।
তিনি জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে সঙ্গে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী নির্বাহী প্রকৌশলীও ছিলেন। ভাঙনরোধে অস্থায়ীভাবে দুপুর থেকে কাজ শুরু হয়েছে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন জানান, ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১২০০ মিটার এলাকায় এই অস্থায়ী কাজ চলছে। এতে ভাঙনরোধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/এমএস