ইসলামে সালাম অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসুল (সা.) বেশি বেশি সালাম দিতে উৎসাহিত করে বলেছেন সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভালোবাসা বাড়ায়। নবিজি (সা.) বলেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! তোমরা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না আর পরস্পরে সৌহার্দ ও ভালোবাসা না রেখে তোমরা মুমিন হতে পারবে না। আমি তোমাদের এমন কাজের কথা বলছি যা তোমাদের পারস্পরিক সৌহার্দ বৃদ্ধি করবে, নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সালাম দাও। (সহিহ মুসলিম: ২০৩)
Advertisement
তবে কিছু অবস্থায় সালাম দেওয়া অপছন্দনীয় ও নিষিদ্ধ। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, এক ব্যাক্তি একবার নবিজিকে (সা.) প্রশ্রাবরত অবস্থায় সালাম দিলো। নবিজি প্রয়োজন পূরণ শেষ করে অজু করার পর তার সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন,
إِذَا رَأَيْتَنِي عَلَى مِثْلِ هَذِهِ الْحَالَةِ فَلاَ تُسَلِّمْ عَلَىَّ فَإِنَّكَ إِنْ فَعَلْتَ ذَلِكَ لَمْ أَرُدَّ عَلَيْكَ
আমাকে এ অবস্থায় দেখতে পেলে সালাম দিও না। এ অবস্থায় আমি তো তোমার সালামের উত্তর দিতে পারবো না। (সুনান ইবনে মাজা: ৩/৩৫২)
Advertisement
এই হাদিস থেকে বোঝা যায় প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করছে এমন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া যাবে না। ইসলামি আইন বিশারদগণ এ রকম আরও কিছু অবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন, যাদেরকে সালাম দেওয়া অপছন্দনীয় ও মাকরুহ:
১. যে অজু-গোসল করছে বা গোসলখানায় অবস্থান করছে, তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ।
২. যে খাবার খাচ্ছে, তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ।
৩. কুরআন তিলাওয়াত বা আল্লাহর জিকির করছে এমন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া মাকরুহ।
Advertisement
৪. যে ব্যক্তি তাওয়াফ করছে ও তালবিয়া পড়ছে, তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ।
৫. কোথাও কুরআন, হাদিস বা দীনি ইলমের ক্লাস, আলোচনা চলতে থাকলে সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অংশগ্রহণকারীদের সালাম দেওয়া মাকরূহ।
৬. খুতবা বা ওয়াজের মজলিসেও ওয়াজকারী ও শ্রোতাদের সালাম দেওয়া মাকরুহ।
৭. আজান ও ইকামতের সময় মুআজ্জিনকে সালাম দেওয়া মাকরুহ।
৮. প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের সময় কাউকে সালাম দেওয়া মাকরুহ।
সালাম দেওয়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল হলেও এই অবস্থাগুলোতে সালাম দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এই অবস্থাগুলোতে কেউ সালাম দিলে তার সালামের উত্তর দেওয়া জরুরি নয়।
ওএফএফ/এএসএম