আন্তর্জাতিক

যেভাবে পণ্য উৎপাদনে পরাশক্তি হতে পারে লাতিন আমেরিকা

লাতিন আমেরিকা ও এর দুইশ হেক্টর ভূমি খাদ্য, জ্বালানি ও ধাতুর ক্ষেত্রে গত পাঁচ শতাব্দী ধরে বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎস। প্রথমে অঞ্চলটি সোনা, তামা, কটন, চিনির জন্য উপনিবেশদের দ্বারা লুটের শিকার হয়। পরে এটি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে রাবার ও তেল সরবরাহ শুরু করে। সব কিছু ছাপিয়ে ২১ শতাব্দীতে পণ্য উৎপাদনে পরাশক্তি হওয়ার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে লাতিন আমেরিকাকে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে তাদের এই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত।

Advertisement

বিশ্ব এখন ক্লিন এনার্জির দিকে ঝুঁকছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের সোলার, উইন্ড পার্ক, পাওয়ার লাইন ও ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরিতে বেশ কিছু ধাতুর চাহিদা তুঙ্গে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ধাতুর এক-পঞ্চমাংশ লাতিন আমেরিকায় রয়েছে। তামার খনি ও সবুজ প্রযুক্তিতে আধিপত্য রয়েছে অঞ্চলটির। তাছাড়া বিশ্ব লিথিয়ামের ৬০ শতাংশই লাতিন আমেরিকায় রয়েছে, যা ব্যাটারি তৈরির অন্যতম উপাদান। এটি রূপা, টিন ও নিকেলের ক্ষেত্রেও সমৃদ্ধ। অঞ্চলটির বিভিন্ন জায়গায় তেলের সন্ধানও আশাবাদী করে তুলছে।

যেহেতু বিশ্ব সবুজায়নের দিকে নজর দিচ্ছে, তাই অঞ্চলটি আরও বেশি জনপ্রিয় হবে। বিশ্ব খাদ্য রপ্তানিতে লাতিন আমেরিকার ভূমিকা অপরিসীম। এটি এরইমধ্যে বিশ্বের ভুট্টা, গরুর মাংস, মুরগির মাংস ও চিনির ৩০ শতাংশ ও ৬০ শতাংশ সয়াবিন সরবরাহ করে। বিশ্বের আরবিকা কফির দশ কাপের মধ্যে আটটি এই অঞ্চল থেকে তৈরি হয়। ২০৩২ সালের মধ্যে অঞ্চলটি ১০০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য রপ্তানি করতে পারে, যা হবে বিশ্বের যে কোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি।

আরও পড়ুন>চাঁদে পা রাখার অপেক্ষায় চন্দ্রযান-৩

Advertisement

পরাশক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণেও অঞ্চলটি আরও বাণিজ্যিক অংশীদার পাবে। পশ্চিমাদেশগুলো চীন থেকে রেব হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে লাতিন আমেরিকার সঙ্গে আরও চুক্তিতে আগ্রহী তারা। কারণ এটি একটি নিরপেক্ষ ও শান্তিপ্রিয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।

তবে পণ্য উৎপাদনের এই সুবিধাকে খুব একটা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। এর অন্যতম কারণ হলো সামরিক অভ্যুত্থান, বৈষম্য ও জনতুষ্টিবাদ।

আরও পড়ুন>ফাঁকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, তবুও এটিএম থেকে তোলা গেলো লাখ লাখ টাকা!

এইখাত থেকে ভালো কিছু করতে হলে এসব সমস্যার সমাধান করে লাতিন আমেরিকা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে উৎপাদন ব্যবস্থাকে অব্যাহত রাখতে হবে। তাছাড়া খনির কাছাকাছি বসবাসকারী সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুযোগ-সুবিধা ভাগ করে নেওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা দীর্ঘকাল ধরেই উপেক্ষিত।

Advertisement

সরকারগুলোকে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে। যখন অর্থনীতি ভালো অবস্থানে থাকে, তখন দুর্দিনের জন্য কিছু মজুত করে রাখতে পারে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো ও গবেষণায়ও বিনিয়োগ বাড়াতে পারে।

এমএসএম