জাতীয়

আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতিশীলতার জন্য ভারত অত্যন্ত পরিপক্ব

নিজেদের জন্য এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভারত অত্যন্ত পরিপক্ব বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেন।

Advertisement

রোববার (২০ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ভারতের পশ্চিবঙ্গ থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনা হচ্ছে, বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারত ওয়াশিংটনকে বার্তা দিয়েছে, এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক কোনো ভাষ্য আছে কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার অত্যন্ত পরিপক্ব। তাদের অত্যন্ত শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ। তারা যেটা ভালো মনে করে, সেটাই তারা করেছে। সে সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার কোনো কারণ নেই।

আরও পড়ুন>> আনন্দবাজারের প্রতিবেদন বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি অবজ্ঞা: রিজভী

Advertisement

মোমেন বলেন, তাদের সরকার ব্যবস্থা অত্যন্ত পরিপক্ক। তারা নিজেদের জন্য এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য যদি কিছু বলে থাকে, অবশ্যই এটা অত্র এলাকার উপকারে আসবে।

তিনি বলেন, জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ২১ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসসার হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জোহানেসবার্গে অবস্থানকালীন অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন। এ মুহূর্তে নতুন সদস্য করবে কি না জানি না। তবে আমরা এরই মধ্যে ব্যাংকে জয়েন্ট করেছি, আমরা কয়েকটি প্রকল্পে অর্থ সহায়তা পেয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, ব্রিকসে জয়েন্ট করতে পারলে উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতা পাবো। আমরা আফ্রিকাতে সম্পর্ক বাড়াতে চাই, যেখানে ব্রিকসের মাধ্যমে যেতে সুবিধা হবে। আফ্রিকায় আমাদের (ভালো) সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে। আমাদের বিশ্বাস এতে করে আমাদের সম্পর্কে উন্নতি ঘটবে। সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সাক্ষাৎ করে বলেছিলেন আমরা ব্রিকসের সংখ্যা (সদস্য) বাড়াতে চাই। আমরা বহু রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য যোগাযোগ করেছি। যেহেতু সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ রয়েছে, সেহেতু দেখা তো হবে।

Advertisement

সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন জোহানেসবার্গে থাকবেন, তখন অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের আয়োজন করবো। এখনো সব চূড়ান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপ্রধানদের সাক্ষাতগুলো শেষ মুহূর্তে হয়। তবে অবশ্যই অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। দ্বিপাক্ষিকভাবে হবে।

আর ব্রিকসে যোগদানে বাংলাদেশের সর্বশেষ অবস্থা কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, যখন জেনেভাতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত তার সঙ্গে দেখা করে তাকে দাওয়াত দেন। তখন তিনি বলেছিলেন, তারা ব্রিকসের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চান। এখন তারা পাঁচজন, এটা বাড়াতে চান। বাংলাদেশকেও তাদের সদস্য করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে চূড়ান্ত হয়নি। এখন শুনতে পেয়েছি তারা এ মুহূর্তে নতুন সদস্য নেবেন কি না- তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ তারা একটা মোডালিটি (পদ্ধতি) তৈরি করবেন- কী প্রেক্ষাপটে নেবেন, কী কী হবে...। এটা কোনো ব্যাপার না। আমরা কোনো তাড়াহুড়ো করবো না।

আরও পড়ুন>> আনন্দবাজারের প্রতিবেদন নিয়ে যা বললো জামায়াত

এরই মধ্যে আমরা ব্রিকস ব্যাংকে যোগদান করেছি। ব্রিকস হ্যাভ অ্যা লার্জ অ্যামাউন্ট- তাদের প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। এখন যারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার, তাদের অনেকেই ইদানীং খুব একটা সাহায্যে আসছে না। আর সামনে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)। যখন আমরা এসডিজি অ্যাপ্রুভ করি, তখন কথা ছিল, এসডিজির জন্য প্রতি বছর সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন থেকে ১১ ট্রিলিয়ন পর্যন্ত লাগবে। কিন্তু সেই টাকাটা কেউ দিচ্ছে না।

ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর সংখ্যা সীমিত। সরকারিভাবে মোট ১৪ জন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাবেন। এমনিতে বাইরের কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি যাবেন, ব্যবসায়ী যাবেন। কারণ, আমাদের বিনিয়োগ, বাণিজ্য বাড়ানোর একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। সেজন্য কিছু ব্যবসায়ী যাবেন।

এসময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি শাখার মহাপরিচালক সেহেলি সাবরিন উপস্থিত ছিলেন।

আইএইচআর/ইএ/জিকেএস