জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। শনিবার (১৯ আগস্ট) চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এ মহড়া শুরু করে।
Advertisement
এক বিবৃতিতে পিএলএ’র ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, তাইওয়ানের চারপাশ দিয়ে নৌ ও আকাশ পথে সামরিক মহড়া শুরু করেছে তারা। চীনের সামরিক মুখপাত্র শি ই বলেছেন, এ মহড়ার উদ্দেশ্য পিএলএ’র আকাশ ও সমুদ্রপথে নিয়ন্ত্রণ দখল করা ও বাস্তব যুদ্ধের পরিস্থিতিতে লড়াই করার সক্ষমতা পরীক্ষা করা। তাছাড়া এ মহড়া তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও তাদের বিদেশি উসকানিদাতাদের জন্য একটি কঠোর সতর্কবাণী।
প্যারাগুয়ে সফরের মধ্যে তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতি নেওয়া কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে এ উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চীনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করেই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা খাত জোরদারে সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
দ্বীপটির চারপাশে সম্প্রতি চীনা উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় পাল্টা প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে তাইপেও। এরই অংশ হিসেবে এবার তাইওয়ান প্রণালী ও এর আশপাশে ব্যাপক মহড়া চালায় স্বশাসিত দ্বীপটি। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) মহড়া চালানোর একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বিভাগ।
Advertisement
ওই মহড়ার জবাবেই তাইওয়ানের চারপাশে টহল চালিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দ্বীপটির আকাশসীমায় অন্তত সাতটি চীনা যুদ্ধবিমান ও সাগরে সাতটি রণতরীর উপস্থিতি শনাক্ত করে তাইওয়ান সেনাবাহিনী। চলতি মাসে এ পর্যন্ত তাইওয়ানের চারপাশে ২০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ও শতাধিক জাহাজ পাঠিয়েছে বেইজিং।
এদিকে চীনের হুমকি উপেক্ষা করেই যুক্তরাষ্ট্র ও প্যারাগুয়ে সফর শেষ করেছেন তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাইপে। তাইওয়ান সম্প্রতি প্রতিরক্ষা খাতে অনেক উন্নতি করেছে বলেও জানান লাই।
চীনের অখণ্ডতা ধরে রাখতে দীর্ঘদিন ধরেই তাইওয়ান ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে বেইজিং। অঞ্চলটির চারদিকে সামরিক কর্মকাণ্ড জোরদারের পাশাপাশি তাইপে ইস্যুতে ওয়াশিংটনের হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে আসছে চীন।
তাইওয়ানের সঙ্গে অন্য কোনও দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়লেই চীনের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমান এবং নৌ মহড়াও বেড়ে যায়। মূলত তাইওয়ান যেন চাপে থাকে সেকারণেই এমনটা করছে বেইজিং। অন্য কোনও দেশ তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা দেবে সেটা চায় না চীন।
Advertisement
সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন
এসএএইচ