সাহিত্য

রাইসুল এইচ চৌধুরীর গুচ্ছ কবিতা

অকারণ

Advertisement

কোনো কারণ ছাড়াই কেউ কি এমন পর হতে পারে!হতে পারে ঠিকানা বিহীন বেওয়ারিশ পলে-পলে কেউ কি এমন ঝরাতে পারে চোখের জল;নিছক ছলে!ভাসিয়ে দিতে পারে ফসলের জমিমাছের পুকুর জলের তামাম দুনিয়া!

কোনো কারণ ছাড়াই কেউ কি এমন কষ্ট দেয়;পুড়িয়ে দেয় বুকের জমিন!নিঃশেষ করে সাজানো শহর;আসমান-জমিনউজাড় করে বনভূমি স্বপ্নবিলাস তিলে তিলে শেষ করে সব জমানো বিশ্বাস।

কোনো কারণ ছাড়াই কেউ কি চোখের জল ঝরায়;যখন-তখন! মাঘ মাসের শীতেও কি কেউ পোড়ায় বুকের নরম আঁচলদগ্ধ দেহে ঘুরে বেড়ায় শীতের শিশির বুকে মেখে হরহামেশায়যে নদীতে জোয়ার ছিল প্লাবন ছিলজোৎস্না রাতেকেমন করে শুকিয়ে গেল ডুমুর ফুলেরগন্ধবিলাস!

Advertisement

কোনো কারণ ছাড়াই কেউ কি এমন কষ্ট দেয় যখন-তখন!

****

স্মৃতির ক্লোজেট

স্মৃতির ক্লোজেট হু-হু করছেকোনো কিছুই নেই বাকিআঘাতে আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে;পক্ষাঘাত রোগীর মতোআমি আজ চেতনাহীন মানবসবুজ শ্যাওলার মতোদেওয়ালের গায়ে আর কতহুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকি?হিসেবের লেন-দেন মেলাতে মেলাতে বেহিসেবী জীবনটার;হিসাব মেলানোর সময়ও বুঝি পেলাম না।কাঠের বাক্সে বন্দি সাপের মতোনির্বিষ জীবন;আর কত বয়ে বেড়াই!

Advertisement

রাংতার মতো নাজুক স্বপ্নগুলোঘিরে রেখেছে- ঘুটঘুটে আঁধারএলেবেলে আকাঙ্ক্ষাগুলোহারিয়ে গেছে নিমিষেই দিগন্ত রেখায় ডুবে যাওয়ামিহির মতো।তোমার আঙিনায় শালিকের মতোনীরব-নিথর স্পর্শ রাখি বার বারশুনতে কি পাও তুমিমেঘবালিকা!

আষাঢ়ে ভিজে ভিজে;সাঁওতাল মনকদমের ডালে;তোমার খোপায় পরানো কদম ফুল হাতের ভাঁজে লুকানো স্পর্শ এখনো জল ঢালেবুক পকেটেশুনতে কি পাও তুমি বোবা কান্না!অহর্নিশ ভিজছে যে চোখের জানালাবাতাসে জলের শব্দভেসে ভেসে তোমার চোখের পাপড়িছুঁয়ে;ফিরে আসে বিষণ্ণ হয়ে;শুনতে কি পাও তুমি মেঘবালিকা?

****

মধ্যরাতের সুখ

চোখের পাপড়ি ছুঁয়ে গেলইথারের স্রোতজলের লাহানকেন এত ঢেউ খেলো!তুলে সাম্পানভিজে ভিজে একাকার শরীরের লোম;অম্বুরী নহরে-সাঁতরে বেড়ালো বেওয়ারিশ প্রেমআজ মধ্যরাতে কেন এত জল ঢালো ভেজা শহরে!

আজ মধ্যরাতে, প্রজাপতি উঁকি দেয়;খুলে আসমানশরীরে সুর তোলেপ্রেমের মাচানছলকে-ছলকেউচাটন মনঝরে কেন আজ, খুলে হৃদয় সামান!বাজিগর মন কেন উচাটন!চুপে-চুপে পেখম মেলেছড়িয়ে জাফরান।

এসইউ/