দীর্ঘ সময় পর কাঙ্ক্ষিত ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন গভীর সমুদ্রের জেলেরা। দীর্ঘদিন পর ইলিশের দেখা পেয়ে খুশি জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে ইলিশ না পেয়ে এখনো হতাশ উপকূলবর্তী জেলেরা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলীপুর ও মহিপুর ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন আড়তে স্থানীয় ছাড়াও চট্টগ্রাম, ভোলা, বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, কক্সবাজার থেকে অনেক ট্রলার ইলিশ বিক্রি করতে এসেছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ায় সরগরম পুরো মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। বিভিন্ন সাইজের ইলিশের ক্রয়-বিক্রয় এবং হাঁকডাকে ব্যস্ত মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে সমুদ্রে যাওয়ার সাতদিনের মধ্যে দুইবার বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে ফিরে আসায় সংকটে পড়েন জেলেরা। তবে এবার সমুদ্রে নামার পর ইলিশের দেখা পেয়ে সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছেন তারা। ইলিশের দেখা পেয়ে তারা যেমন খুশি, তেমনই খুশি দামেও। তবে অতিরিক্ত দামে পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাঝে মাঝে লোকসানে পড়ছেন।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করতে আসা এফবি মারুফ ট্রলারের মাঝি বেল্লাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, দশদিন আগে সাগরে মাছ ধরতে গেছিলাম। প্রথম চার দিন জাল টেনে কোনো মাছ পাইনি। পরে অল্প অল্প মাছ পেতে থাকি। গতকাল পর্যন্ত মোটামুটি ভালো মাছ পেয়েছি যা গত এক বছরেও পাইনি। আজ মাছ নিয়ে আলিপুর মৎস্য বন্দরে বিক্রি করতে এসেছি। যা মাছ পেয়েছি তার দাম ১০ লাখ টাকার ওপরে হবে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, গত ২ মাসে ৩ বার সাগরে গিয়ে ১৫ লাখ টাকা লোকসানে পড়েছি। এরমধ্যে আবহাওয়া খারাপ থাকায় কয়েকবার তীরে ফিরতে হয়েছে। ১০ দিন আগে চরফ্যাশন থেকে মাছ শিকারে নেমে আজ মাছ বিক্রি করতে এখানে এসেছি। আবার এখান থেকে ১৫ দিনের বাজার নিয়ে সাগরে যাবো। মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবো। এভাবে যদি মাছ আবার পাই তাহলে ঋণ পরিশোধ করে সংসারে খরচ করতে পারবো।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মোল্লা ফিসের পরিচালক এজাজ মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, গভীর সমুদ্রের জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে আসছে এবং ভালো দামও পাচ্ছে। আজ জাটকার মণ ২১ হাজার টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ ২৮ হাজার, ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ ৩৬ হাজার এবং ১ কেজির উপরের ইলিশ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। তবে এই দামে জেলেরা খুশি থাকলেও পাইকারি ক্রেতারা প্রায়ই লোকসান গুনছেন।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন যাবত গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারকারী ট্রলারগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে ফিরছে। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপকূলবর্তী জেলেরা। এর প্রধান কারণ হলো আন্ধারমানিক ও রামনাবাদ চ্যানেল সংলগ্ন বেশ কয়েকটি ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে, যে কারণে ইলিশ তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। ৬৫ দিনের অবরোধের সুফল পাচ্ছেন জেলেরা। তাই উপকূলের জেলেদের জন্য পরামর্শ থাকবে তারা যেন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের সরঞ্জামাদি তৈরি করেন।
এফএ/এএইচ/জেআইএম
Advertisement