আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তালেবান। বুধবার (১৬ আগস্ট) তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশটিতে কার্যকর থাকা শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো ভূমিকা নেই। তাই এখন থেকে এসব দলের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে ঠিক কবে থেকে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে, তা পরিষ্কার করে জানায়নি তালেবান।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার তালেবানের ন্যায়বিচার বিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীনমন্ত্রী শাইখ মৌলবি আবদুল হাকিম শারি কাবুলে তার মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সেময় তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড পুরোপুরি বন্ধ করা হলো। কারণ শরিয়াহ আইন অনুযায়ী, তাদের কোনো অবস্থান নেই। এসব দলের সঙ্গে কোনো জাতীয় স্বার্থও জড়িত নয় ও দেশের সাধারণ মানুষ তাদের পছন্দও করে না।
আরও পড়ুন: জনগণকে ‘শিক্ষা দিতে’ প্রকাশ্যে শাস্তি দিচ্ছে তালেবান
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘোষণা এটাই প্রমাণ করে যে, আফগানিস্তানে বহুপক্ষীয় রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করতে চায় তালেবান। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিজেদের একচেটিয়া অধিকার ধরে রাখতে চায় তারা।
Advertisement
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ওই সময় তালেবানের প্রত্যাবর্তন ও পশ্চিমাদের দেশটি ছেড়ে চলে আসা আফগানিস্তানের ওপর দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এ পর্যন্ত কোনো দেশই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।
আরও পড়ুন: মেয়েদের তৃতীয় শ্রেণির বেশি পড়ালেখা নিষিদ্ধ করলো তালেবান
তাছাড়া ক্ষমতা দখলের পর থেকেই নারীদের উপর শিক্ষাসহ আরও নানাবিধি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকে তালেবান সরকার। দেশটিতে এখন নারীদের বিনোদনকেন্দ্র, জিম, মেলা, সেলুনে যাওয়া নিষিদ্ধ ও জনসম্মুখে যেতে হলে ইসলামে দেওয়া পর্দার বিধান যথাযথভাবে মানতে হয়। নির্দেশনা না মানায় এরই মধ্যে অনেক নারীকে সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গান-বাজনা ‘অনৈতিক’: ঢোল-তবলা-স্পিকারে আগুন দিলো তালেবান
Advertisement
শিক্ষা গ্রহণ ও চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য তালেবান সরকারেকে বার বার তাগাদা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের এজেন্সি ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোতেও নারীদের কাজ করতে দিতে হবে বলে শর্ত দেয় ওয়াশিংটন। তাছাড়া আফগান সরকারে তালেবান সদস্যরা ছাড়াও অন্যদের স্থান দিতে হবে বলে জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু এসব শর্তের কোনোটিই এখন পর্যন্ত মেনে নেয়নি তালেবান।
সূত্র: ডন
এসএএইচ