আট থেকে আশি সব বয়সী মানুষ এখন ব্যবহার করছেন মোবাইল ফোন। শুধু তাই নয়, ছোট শিশুদেরও সঙ্গী এখন স্মার্টফোন। একেবারে ছোট শিশুরাও আসক্ত হচ্ছে স্মার্টফোনে। এখন অনেক বাবা-মা শিশুকে খাওয়ার সময় গল্প শোনান না, হাতে ধরিয়ে দেন স্মার্টফোন। এতে ধীরে ধীরে শিশু স্মার্টফোনেই আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
যত দিন যায় এই আসক্তি কমে না বরং বাড়তে থাকে। গেম খেলা থেকে শুরু করে অনলাইনে নানা রকম কার্টুন দেখে সময় কাটে তাদের। শহরের ফ্ল্যাট বাড়িতে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা বা আড্ডা দেওয়ার উপায় নেই। আবার কর্মব্যস্ত বাবা-মা সেভাবে সময় দিতে পারছেন না শিশুকে। এসব কারণেই মূলত শিশুদের সঙ্গী হয়ে উঠছে মোবাইল ফোন।
তবে শিশুর মোবাইল ফোন আসক্তি কমাতে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। বকুনি দিয়ে কিংবা মেরে শিশুকে শাসন করবেন না কিংবা তার কাছ থেকে স্মার্টফোন কখনো কেড়ে নিবেন না। বুঝিয়ে যত্ন সহকারে তার মধ্যে অন্য কাজের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে হবে। জেনে নিন সেসব-
আরও পড়ুন: স্মার্টফোন আসক্তি কমাবেন যেভাবে
Advertisement
স্ক্রিন টাইমিংশিশুর কাছে যে মোবাইল ফোন বা ডিভাইস দিচ্ছেন সেটি স্ক্রিন টাইমিং নির্ধারন করে দিন। এতে নির্দিষ্ট সময় পর আপনাআপনি ফোন বন্ধ হয়ে যাবে।
কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুনশিশুর হাতে যে ডিভাইস দিচ্ছেন তাতে কঠিন পাসওয়ার্ড সেট করুন। এতে আপনি ছাড়া সে মোবাইল ফোন বা ডিভাইসের লক খুলতে পারবে না। ফলে যখন তখন আপনার অজান্তে মোবাইল ফোন ব্যবহারও করতে পারবে না।
ইন্টারনেট সংযোগ রাখবেন নাশিশুর মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ রাখবেন না। ফলে অল্প যে কয়েকটি ভিডিও বা গেম ডাউনলোড করে রাখছেন সেগুলোই শিশু দেখবে।
ঘরে খেলার ব্যবস্থা করুনশিশুর জন্য ঘরেই খেলার পরিবেশ তৈরি করে দিন। এতে শিশু বাইরে যেতে না পারলেও ঘরেই নিজের মতো খেলতে পারবে।
Advertisement
ধাঁধার সমাধান করতে দিনপাজল গেম শিশুর মানসিক বিকাশে উন্নত করে। পাজলের অংশ মিলিয়ে পৃথিবীর ম্যাপ হলো বা কোনো ছবি তৈরি হলো। সেরকম খেলায় নিয়োজিত করুন শিশুকে। একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে এ কাজ করার জন্য। খেলার ছলে শিশুর মানসিক বিকাশও হবে এর ফলে। নির্দিষ্ট সময়ের পাজল মিলিয়ে ফেলতে পারলে শিশুকে একটি ছোট্ট উপহারও দিতে পারেন। এতে তার মধ্যে খেলার ইচ্ছেও জন্মাবে।
আরও পড়ুন: ইরর ৪০৪ এর আসল অর্থ কী?
অডিও বুক দিতে পারেনঅনলাইন ক্লাস করার পর শিশুর আবার বই পড়তে নাও ভালো লাগতে পারে। সেজন্য শিশুকে অডিও বুক শোনাতে পারেন। অডিও বুকে যে রকম নাটকীয় ভাবে গল্প পাঠ করা হবে, তা শিশুরা শুনেই মনে রাখতে পারবে।
ছবি আঁকারং নিয়ে খেলা করলে শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটে। এর ফলে শিশুরা নতুন কিছু তৈরি করার চেষ্টা করে। আপনার শিশুকে রং পেন্সিল কিনে দিন। ছবি আকার জন্য খাতা দিন। মনের মতো আঁকতে বলুন। রং নিয়ে খেলা করলে শিশুর মন ভালো হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে ছবি আঁকার দক্ষতাও বাড়বে।
বিকল্প দিনআপনার সন্তানের যে কাজে মনোযোগ তাকে সেটি করতে দিন। নাচ, গান বা খেলাধুলা যা সে করতে চায়, তা করার জন্য উৎসাহ দিন। তাহলে স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি কমতে শুরু করবে। যে সময়টি যে ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে কাটায়; এর বিকল্প কিছু করানোর চেষ্টা করুন।
নিজে সময় দিনআপনি বাবা-মা হিসেবে নিজের সন্তানকে সময় দিন। সন্তানের সঙ্গে গল্প করুন। একসঙ্গে টিভি দেখতে পারেন। কোনো পাজল মিলাতে পারেন কিংবা কোনো শব্দ বা বাক্য তৈরি করতে পারেন। তাকে পড়ায় সহযোগিতা করতে পারেন। কিংবা আপনার রান্না বা বাগানের কাজে শিশুকে যুক্ত করতে পারেন।
সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস, প্যারেন্ট সার্কেল
কেএসকে/জেআইএম