দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিলে পানি থৈ থৈ করছে। সেইসঙ্গে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। এ কারণে ঝালকাঠির নৌকার হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে জমজমাট হয়ে উঠেছে।
Advertisement
বর্ষা মৌসুম এলেই ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী-নালা খাল-বিলবেষ্টিত এলাকায় নৌকার কদর বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে কৃষিপণ্য পরিবহনসহ যাতায়াতে এখনো নৌকার কদর রয়েছে গ্রামীণ জনপদে। আর এ বাড়তি চাহিদার যোগান দিতে নৌকা তৈরির কারিগররা এখন বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নদ-নদীতে পানি বাড়ায় নৌকার চাহিদা বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে কয়েকজন কারিগর জানান, কাঠ-লোহাসহ নৌকা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও সে তুলনায় বাড়েনি নৌকার দাম। তাছাড়া নিজস্ব পূঁজি না থাকায় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে উপকরণ কিনতে হয়। যে কারণে তারা তেমন দাম পাচ্ছেন না। তবুও তারা প্রতি হাটে তৈরি করা নৌকা নিয়ে হাজির হন।
দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম আটঘর নৌকার হাট ক্রেতা-বিক্রেতা সমাগমে জমে উঠেছে। দুই শতাধিক বছরের পুরোনো ঝালকাঠির সীমান্তবর্তী নৌকা কেনা-বেচার এ হাটে বিক্রির জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে কারিগর এবং মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নৌকা নিয়ে আসেন। এসব নৌকা যাচ্ছে বৃহত্তর বরিশাল এবং ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায়। প্রতি মৌসুমে এ হাটে এক থেকে দেড় কোটি টাকার নৌকা বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
Advertisement
বিক্রির জন্য গত শুক্রবারের হাটে ৪৮টি নৌকা এনেছিলেন ব্যবসায়ী আল আমিন। তিনি জানান, ৪০টিই বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি নৌকাগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে। এই হাটে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের নৌকা পাওয়া যায়। কাঠের মান, আকার অনুযায়ী দাম।
নৌকার হাটের ইজারাদার আবদুর রহিম জানান, প্রতি বছর নৌকার বিক্রির মৌসুমে প্রতি হাটে কয়েকশ নৌকা বিক্রি হতো। এখন কিছু কম বিক্রি হচ্ছে। আগের তুলনায় নৌকার দামও বেশি।
ঝালকাঠি বিসিক শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক এইচ এম ফাইজুর রহমান বলেন, নৌকা তৈরির কারিগরদের পুঁজি সংকট রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে তাদের বিসিক থেকে স্বল্প সুদে মৌসুমি ঋণ দেওয়ার একটি প্রকল্প রয়েছে। তারা ঋণের জন্য এলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মো. আতিকুর রহমান/এমআরআর/এমএস
Advertisement