‘বছর দুই আগে করোনায় চাকরি হারিয়ে পড়তে হয় বিপাকে। চারদিকে নতুন চাকরি খুঁজেও মেলেনি। বৃদ্ধ বাবা-মা আর সংসার নিয়ে চরম হতাশায় দিন পার করছিলাম। হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলাম আর চাকরি নয়, উদ্যোক্তা হবো। সেই থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে নাম লেখানো। এখন অনেক বড় চাকরিজীবীর থেকে বেশ ভালো আছি। এখন আর বৃষ্টির পানি বিছানায় পড়ে না। মা-বাবার অসুস্থতায় টাকার চিন্তায় কপালে আর ভাঁজও পড়ে না। ভালো-মন্দ খাবার এখন নিত্যসঙ্গী। সবই হয়েছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কারণে।’
Advertisement
কথাগুলো বলছিলেন সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের বাসিন্দা রিপন হোসেন। শুধু রিপন নয়, ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজেদের ভাগ্য বদলে ফেলেছেন সাভারের অনেক।
সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির হুসাইন। পোশাক পরিচ্ছদ আর চাল-চলনে যে কেউ বলবে হয় ব্যবসায়ী, না হয় ভালো মানের চাকরিজীবী। নিজস্ব গাড়িতে বসেই কথা বলেন জাগো নিউজের সঙ্গে।
তিনি বলেন, আমার যা কিছু দেখছেন সব নিজের টাকায় কেনা। আমি স্বাধীনভাবে কাজ করি। ইচ্ছা হলে কাজ করি, না হলে বসে থাকি। কারো কাছে জবাবদিহিতা নেই। এক সময় আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার জন্য মা-বাবার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এখন তাদেরকে আমিই সহযোগিতা করি।
Advertisement
তথ্য বলছে, প্রায় দেড় হাজার ফ্রিল্যান্সার সাভার থেকে ৩২টিরও বেশি মার্কেটপ্লেসে কাজ করেন। এর ৫৫ শতাংশেরই বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছর। তারা সবাই হতাশার চাদর সরিয়ে ভাগ্য বদলে ফেলেছেন। তাই তাদের দেখানো পথে হাঁটছেন অনেকেই।
আশিক নামে এক তরুণের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার চোখের সামনে অনেক তরুণই জীবনের হাল ধরেছেন। তাই নিজে ইউটিউব দেখে ও সিনিয়দের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে কাজ শিখছি। একদিন আমিও সফলদের দলে যোগ দেবো। বদলে দেবো আমার ভাগ্য।
কারিগরি একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক শাহিনুর রহমান বলেন, ২০০৬ সাল থেকে মূলত সাভারে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ আসা শুরু হয়। যতোই সময় যাচ্ছে ততোই প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের প্রশিক্ষণ দিতে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ট্রেনিং সেন্টার।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ফ্রিল্যান্সিং ধীরে ধীরে তরুণ ও যুব সমাজে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ও যুব উন্নয়নের মাধ্যমে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সহয়তা দিতে কাজ করছে প্রশাসন।
Advertisement
এফএ/এএইচ/এমএস