ভারত সরকারের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিন্দি। অথচ সেই দেশেরই একটি রাজ্যে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শন। শুনে আশ্চর্য লাগছে তো?
Advertisement
এনডিটিভির খবর অনুসারে, সেই রাজ্যটির নাম মণিপুর। সম্প্রতি জাতিগত দাঙ্গায় উত্তাল হয়ে ওঠা রাজ্যটিতে প্রায় ২৫ বছর ধরে কোনো হিন্দি চলচ্চিত্র দেখানো হয় না।
আরও পড়ুন>> মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় উত্তাল ভারত
জানা যায়, সবশেষ ১৯৯৮ সালে মণিপুরের সিনেমা হলগুলোতে দেখা গিয়েছিল শাহরুখ খান অভিনীতি ‘কুচ কুচ হোতা হ্যায়’ চলচ্চিত্রটি। এরপর থেকে আর কোনো হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র প্রকাশ্যে চালানো হয়নি রাজ্যটিতে।
Advertisement
মণিপুরে হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বিদ্রোহী সংগঠন রেভল্যুশনারি পিপলস ফ্রন্ট (আরপিএফ)। ২০০০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে তারা।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,নিষেধাজ্ঞা জারির এক সপ্তাহের মধ্যে দোকানপাট থেকে সংগ্রহ করা ছয় থেকে আট হাজার হিন্দি ভাষার অডিও-ভিডিও ক্যাসেট এবং কমপ্যাক্ট ডিস্ক পুড়িয়ে ফেলে বিদ্রোহীরা।
আরও পড়ুন>> উত্তপ্ত মণিপুর, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৪০
যদিও মণিপুরে হিন্দি চলচ্চিত্র কেন প্রদর্শন করা হবে না, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো কারণ দেখায়নি আরপিএফ। ক্যাবল অপারেটরদের ধারণা, রাজ্যের ভাষা ও সংস্কৃতিতে বলিউডের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নিয়েছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
Advertisement
এনডিটিভি জানিয়েছে, দুই যুগেরও বেশি সময় পরে অবশেষে মণিপুরে প্রদর্শিত হতে চলেছে হিন্দি চলচ্চিত্র। তবে এর মানে এটা নয় যে, হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ওপর থেকে সব বাধা উঠে যাচ্ছে সেখানে।
আদিবাসী সংগঠন হমার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এইচএসএ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় চুরাচাঁদপুর জেলার রেংকাই (লামকা) এলাকায় একটি হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পরিকল্পনা করেছে তারা। তবে চলচ্চিত্রটির নাম জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন>> মণিপুর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ, মিজোরামে শরণার্থীর ঢল
সোমবার মধ্যরাতের পর পাঠানো এক বিবৃতিতে এইচএসএ বলেছে, মঙ্গলবার ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি হিন্দি চলচ্চিত্র প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা হবে।
সংগঠনটি বলেছে, কয়েক দশক ধরে আদিবাসীদের পরাধীন করে রাখা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি আমাদের অবজ্ঞা ও বিরোধিতা দেখানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। তাই স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার গ্রহণে আমাদের সঙ্গে যোগ দেন। এদিন স্বাধীনতা দিবস বয়কটের ঘোষণা দেওয়া দেশবিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হাত থেকে আমরা আমাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করবো।
কেএএ/