আসন্ন ব্রিকস সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এর আগে সোমবার (১৪ আগস্ট) পূর্ব লাদাখের সীমান্ত সমস্যা মেটাতে চুসুল-মলডো সীমান্তবর্তী এলাকায় বৈঠকে বসেন দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা। বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে তিন বছর পূর্বের স্থিতাবস্থা বহাল রাখাসহ ডেপসাং ও ডেমচক থেকে চীনা সেনাদের পিছিয়ে যাওয়ার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
তিন বছর আগে গালওয়ান উপত্যাকায় ভারতীয় অংশে আচমকাই ঢুকে আসে চীনা সেনারা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ক্ষয়ক্ষতি হয় উভয় শিবিরেই। তারপর থেকেই নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা চলছে। যার ফলে ২০২১ সালে গোগরা হটস্প্রিং এলাকা ও প্যাংগং লেকের বিস্তীর্ণ অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় উভয় দেশ। ভারত ফিরে যায় ফিঙ্গার-২ ও ফিঙ্গার-৩ এর মাঝে থাকা ধানসিংহ ধাপা পোস্টে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর: ভারতের জলপথ মন্ত্রী
অন্যদিকে, চীনের সেনারা ফিঙ্গার ৮ থেকে পিছিয়ে যায়। কার্যত ফিঙ্গার-৩ থেকে ফিঙ্গার-৮ এই দশ কিলোমিটার এলাকা আপাতত বাফার জ়োন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, সেনা প্রত্যাহারের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় (ফিঙ্গার ৩-৮) টহলদারিতে যাওয়ার অধিকার হারিয়েছে ভারতীয় সেনা।
Advertisement
২০২০ সালে গলওয়ানে হওয়া সংঘর্ষের আগে ওই পয়েন্টগুলিতে ভারতীয় সেনা টহলদারিতে যেতে পারতো। কিন্তু চীনের সঙ্গে সমঝোতা করে ওই এলাকা হারিয়েছে ভারত। যদিও মোদী সরকারের দাবি, চীনের কাছে কোনো জমি হারায়নি ভারত।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনের পর আগামী মাসে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন হবে। দুটি জায়গাতেই উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে নরেন্দ্র মোদী ও শি জিংপিংয়ের। তার আগে দুই শিবিরের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সোমবারের বৈঠকটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আমরা কি আজও স্বাধীন: প্রশ্ন মমতার
ভারতের পক্ষে এ বৈঠকের নেতৃত্ব দেন কর্পস কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাশিম বালি। চীনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জিংজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের কমান্ডার। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বৈঠকে ডেপসাং এলাকায় চীনা সেনারা যে অবস্থানে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে, সেখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত।
Advertisement
ওই এলাকায় চীনা সেনাদের উপস্থিতির কারণে ভারতের কাছে রণকৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ার স্ট্রিপ কার্যত অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাছাড়া, চীনা বাহিনী এগিয়ে আসার কারণে ওই এলাকায় নজরদারিও চালাতে পারছে না ভারত।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় গ্যাস স্টেশনে বিস্ফোরণ, নিহত ১২
একইভাবে ডেমচক এলাকায় নিজেদের অবস্থান ছেড়ে অনেকটাই এগিয়ে এসেছে চীন। এরই মধ্যে তারা সেখানে বাঙ্কার বানিয়ে ফেলেছে। সে সব এলাকা থেকে পিছিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পাকা কাঠামোযুক্ত বাঙ্কারসহ সবকিছু সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে চীনকে।
সূত্র: ডেকান হেরাল্ড
এসএএইচ