অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ তার বইতে লিখেছেন, ‘স্বাস্থ্যহীনতা আমাদের বড় একটি জাতীয় সমস্যা।’ এ সমস্যা উৎপাদনশীলতা যেমন হ্রাস করে; তেমনই আর্থ-সামাজিক অস্থিরতা বা নেতিবাচকতাও সৃষ্টি করে। সব ধর্মেই বলা হয়, স্বাস্থ্য হচ্ছে উত্তম সম্পদ। জাপানিজ, চাইনিজরা ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত পরিশ্রম করতে পারে। কারণ প্রত্যেকের স্বাস্থ্য ভালো। যার প্রমাণ মেলে তাদের গড় আয়ুর দিকে তাকালে। জাপানে গড় আয়ু ৮১ আর চীনারা গড়ে বাঁচে ৭৯ বছর। আমাদের গড় আয়ু ৭৩ বছর। বাস্তবে চিত্রটি আমরা পর্যবেক্ষণ করলে স্বাস্থ্যহীনতার ভয়াবহতাই খুঁজে পাবো। শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমলেও সার্বিক অবস্থা সুখকর নয়। মাঠ-ঘাট, স্কুল-কলেজের শিশু-কিশোরদের মুখমণ্ডল, কোঠরিগত চোখ এবং অবয়ব দেখলেই একটি মলিনতা, পুষ্টিহীনতা ও দুর্বলতা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছেলে-মেয়ের স্বাস্থ্যহীনতা পরিলক্ষিত হয়। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হ্রাস, কোঠরিগত চোখ, হাড্ডিসার বুক ও মুখমণ্ডল একটি সাধারণ বিষয়; যা সবার ক্ষেত্রেই দেখা যায়। স্তন্যদায়ী মায়েদের অবস্থা এতটাই করুণ যে, তাদের অধিকাংশই মানসিকভাবে অসুস্থ মনে হয়। তাদের চোখের দিকে তাকালে পুষ্টি উপাদানের অভাব এতটাই প্রকট যে, স্বাভাবিকভাবে তাদের প্রতি করুণা জাগে। যদি এখানে কারো তেমন কিছু করার থাকে না। ৭-৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, জ্বর সাধারণ হয়ে গেছে। গ্রাম-শহর সর্বত্রই চিত্রটি আজ ভয়াবহতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এতে পরিবারে শুধু অস্বস্তিই তৈরি হচ্ছে না বরং আর্থ-সামাজিকভাবে ওই পরিবারগুলো পিছিয়ে পড়ছে। যেমন- শিশুরা বিদ্যালয়ে ভালো গ্রেড পাচ্ছে না, ভালো খেলাধুলা করতে পারছে না ইত্যাদি। বাবা অফিসে মনোযোগ দিতে পারছেন না; মাকে উনুন বন্ধ করে অর্ধপেট খেয়ে নির্ঘুম থাকতে হচ্ছে সন্তানের চিন্তায়। কারণ সন্তান জ্বর বা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
Advertisement
সার্বিকভাবে জাতি বা সমাজ গঠনে চারটি মৌলিক জিনিস খুবই দরকার: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুবিচার ও সার্বিক নিরাপত্তা (যেমন- খাদ্য, জ্বালানি, পরিবেশগত নিরাপত্তা)। প্রত্যেকটি আবার একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিক্ষা ছাড়া স্বাস্থ্য অচল, আবার স্বাস্থ্য না থাকলে শিক্ষা অর্জন করা যায় না। ক্ষেত-খামারে, কল-কারখানায় দাঁড়িয়ে কাজ করার জন্য অবশ্যই শরীরের সক্ষমতা থাকতে হয়। তাছাড়া ৮-১০ ঘণ্টা কাজ করা সম্ভব হয় না। তখনই মানুষ কাজে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে, যখন তার শরীরে কুলায় না। কীভাবে দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে সে কাজ করবে। চীনারা প্রায় সবাই ১০-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে। কীভাবে সম্ভব হয়? স্বাস্থ্য, পুষ্টি বা খাদ্যে নিরাপত্তা তাদের এ সক্ষমতার জোগান দেয়। তারা অফিসে প্রবেশ করে গরম পানি, হালকা লিকার চা, মিক্সড ও প্রসেসড্ ফলের বক্স হাতে নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের ফল কেটে দোকানে প্যাকেট করে রাখা হয়, এগুলোকে মিক্সড প্রসেসড্ ফুড বলে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা এগুলো খায়। চীনাদের মুখমণ্ডলের দিকে তাকালেই বোঝা যায় তাদের স্বাস্থ্য বা পুষ্টির সমৃদ্ধতা। যেমন- ত্বক উজ্জ্বল, চোখ, মুখমণ্ডল, কোমনীয়তা ও লাবণ্যে ভরা। তারা প্রায় সবাই প্রতিদিন গড়ে ১০,০০০ স্টেপ হাঁটে বা দৌড়ায়। এটি তাদের দৈনন্দিন কাজের অবশ্যম্ভাবী একটি অংশ। রাত ১০টার পরে কোনো বাসায় আলো দেখতে পাবেন না। কারণ সবাই এ সময়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৬টায় বিছানা ছেড়ে কাজে চলে যায়। তাদের অফিস টাইম হচ্ছে ৮টা-৫টা। এগুলো সবই হলো তাদের মৌলিক স্বাস্থ্যশিক্ষার সুফল।
আরও পড়ুন: কম উচ্চতার পুরুষরাই জীবনসঙ্গী হিসেবে সেরা, বলছে গবেষণা
আমাদের সমাজে স্বাস্থ্যহীনতার মূল কারণগুলো কী? তা একটু খতিয়ে দেখা দরকার। আমার মনে হয়, স্বাস্থ্য সম্পর্কে যে মৌলিক শিক্ষা বা জ্ঞান দরকার তার অভাব আমাদের সমাজে প্রকট। আমরা খাবার খাচ্ছি, কিন্তু অপুষ্টি মনে হয় আরও বাড়ছে। খাবার প্লেটে কেবল ভাত, ডাল আর একটু তরকারি দেখা যায়। পর্যাপ্ত সবজি, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাংস, মাছ, ডিম জোগাড় করার মতো সক্ষমতা স্বল্পসংখ্যক পরিবারেরই আছে। অন্যদিকে ফল কেনার মতো বা উৎপাদন করার মতো সক্ষমতা এখনো একটি বিরাট জনগোষ্ঠীর হাতে নেই। আমরা এখনো খাই বাঁচার জন্য, ক্ষুধা নিবারণের জন্য, পেট ভরার জন্য। কারণ স্বাস্থ্য বা পুষ্টির কথা মাথায় রেখে খাবার কেনা, রান্না করা বা খাওয়ার সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠেনি। কারণ বিষয়গুলো জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা-ই আমাদের মনস্তত্ত্বে এখনো আসেনি। ফলে পুষ্টি বিষয়ে জানার আগ্রহটা শিক্ষিত সমাজের মাঝেও কিঞ্চিৎ পরিলক্ষিত হয়। স্বল্প শিক্ষিত ও পশ্চাদপদ কমিউনিটির জনগোষ্ঠী কী করতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। গ্রামের কৃষক আজও গাভি পালন করে অন্যের ঘরে দুধ জোগান দেওয়ার জন্য, নিজের সন্তান কেবলই চেয়ে চেয়ে দেখে। বলদ বা ষাঁড় গরু পালন করা হয় অন্যের ফ্রিজে মাংস জোগান দেওয়ার জন্য, নিজের জিহ্বাটা কেবলই লালা নিঃসরণ করে ক্ষান্তি দেয়। একই রকম সবজি, মাছ, ডাল বিক্রি করে গ্রামের কৃষক সংসার চালায়। এগুলো তাদের খাওয়ার জন্য নয়, এটাই যেন তাদের নিয়তি। হ্যাঁ, আগের চেয়ে গ্রামের কৃষকরা বেশি স্বচ্ছল, বেশি খাওয়া, খাদ্যে অগ্রগামী; কিন্তু সার্বিক বিচারে তা খুবই অপ্রতুল। এই অপ্রতুলতা শুধু যে তাদের অভাব তা কিন্তু নয়। এটা হচ্ছে তাদের শিক্ষা, সচেতনতা বা জানাশোনার অভাব। স্বাস্থ্যশিক্ষার অভাবে এর গুরুত্ব তাদের কাছে খুবই কম। তাই তারা নিজে খায় না, অন্যকে খাওয়ায়।
Advertisement
বই-পুস্তকে এ স্বাস্থ্যজ্ঞানের বিষয়ে লেখা আছে; কিন্তু আমাদের কাছে তা কেবলই তাত্ত্বিক। বাস্তবের নিরীখে সেগুলো খুব কাজে আসছে বলে মনে হয় না। আবার নিকটজন বা সমাজের বিদ্বজনের নিকট হতে শিখবে সেই রকম সংস্কৃতিও সমাজে গড়ে ওঠেনি। শিক্ষিত জনেরা শহরগামী হওয়ায় গ্রামগুলো অনেকটা জ্ঞানশূন্য হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়ার মাধ্যমে সকলে কেবল নানা তথ্য জানছে, কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা বা জ্ঞান পরাভূতই থেকে যাচ্ছে। আবার অন্যের ভালো পরামর্শ, জ্ঞান সবাই নিতেও চাচ্ছে না। সবাই সবার মতো নিজেকে ধ্যানে-জ্ঞানে বড় মনে করে। ফলে জীবনদক্ষতা, স্বাস্থ্যশিক্ষা যুগ যুগ ধরে একই খাঁচায় বন্দি।
আমাদের মায়েরা আজও রান্না করে স্বাদের জন্য, খাবারের কৌলিন্য আনার জন্য। পুষ্টিকর স্বাস্থ্যসম্মত রান্নার কথা চিন্তা তারা করতে পারে খুব কম ক্ষেত্রে। শত বললেও খাবারে বেশি তেল, মসলা, কম সিদ্ধ করার কথা অনেকে মানতেই পারে না। স্বাদ রান্না করার জন্য যা করা দরকার তা তারা করতে অনেকটা নেশাগ্রস্ত বা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। খাবার স্বাদ হয়েছে এ প্রশংসায় আমাদের অনেক মায়েরা বেজায় খুশি। খাবারের পুষ্টি বিষয়টা তাদের শিক্ষা, সংস্কৃতিতে কোনোভাবেই পুরোপুরি যোগ করা যাচ্ছে না। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে সামাজিকভাবে এ সংস্কৃতি চালু করার শিক্ষা-দীক্ষার ঘাটতি আজও আছে। রেসিপি দেখি, পুষ্টি দেখি না। স্বাস্থ্যশিক্ষার মুখরোচক কথা শুনতে ভিডিও দেখা হয়, কিন্তু স্বাস্থ্যরে গভীর জ্ঞান নিয়ে ভাবা হয় খুবই কম। কালাভুনা, ভুনা মাছ-মাংস, বিরিয়ানি খাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যে আভিজাত্য খুঁজি, কঁচু শাক বা জাম্বুরা ফল খেতে আমরা ততটাই হীন্মন্যতা বা অনাগ্রহে ভুগি। কারণ আমাদের স্বাস্থ্যজ্ঞান, সচেতনতা বা সামাজিক, সংস্কৃতি অনেকটাই অবৈজ্ঞানিক, ঝাড়-ফুঁক প্রকৃতির শিক্ষা দ্বারা আবর্তিত। এগুলো আমাদের অস্থি-মজ্জায় যেন মিশে গেছে।
আরও পড়ুন: এ সময় ফাংগাল ইনফেকশন সারাতে যা করবেন
কোনোভাবেই নতুন শিক্ষা, নতুন জ্ঞান, ব্যতিক্রম ধারণা আমরা সহজে গ্রহণ করতে পারছি না। এমনকি শিক্ষিত সমাজেও এটা অনেকটা দৃশ্যমান। নতুন স্বাস্থ্যজ্ঞান প্রয়োগ করে ঝুঁকি নেওয়ার সাহস আমরা কেন জানি দেখাতে পারছি না। ফলে জীবনদক্ষতা, স্বাস্থ্যশিক্ষা গতানুগতিকতার বেড়াজালে ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেক শিশু কেবল মাংস ও ডিম খেয়ে বড় হচ্ছে। যার কারণে তারা ভবিষ্যতে স্থুলতাজনিত সমস্যায় পতিত হচ্ছে। আবার কেউ কেউ কেবল ডাল-ভাত, আলু ভর্তা খেয়ে বড় হচ্ছে। শিশুর ওজনহীনতা, ক্ষীণকায় দেহ, রোগে জর্জরিত হওয়াতেই তার প্রমাণ মেলে। শিশুদের মা-বাবার দারিদ্র্য যেমন আছে; তেমনই আছে খাবার ও পুষ্টিশিক্ষার অভাব। জীবনের অস্তিত্ব রক্ষাই যেখানে একমাত্র লক্ষ্য; সেখানে স্বাস্থ্যশিক্ষা তাদের কাছে বিলাসিতা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। স্বাস্থ্যশিক্ষার কথা শুনলে তারা এগুলোকে হাস্যকরও মনে করবে এটাই স্বাভাবিক। তাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব যেমন রয়েছে; তেমনই আছে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার দারুণ ঘাটতি। মিডিয়া, সামাজিক সংগঠন, এনজিও এ ক্ষেত্রে দারুণভাবে কাজ করতে পারে। অনেক এনজিও অবশ্য কাজগুলো সীমিত পরিসরে হলেও করছে। তবে তাদের বাণিজ্যিক মানসিকতা, বিদেশি ফান্ডের প্রতি অদম্য আগ্রহ এ স্বাস্থ্যশিক্ষা সংক্রান্ত কাজগুলো দীর্ঘমেয়াদে হালে পানি পাচ্ছে না।
Advertisement
মা-বাবা সন্তানদের পোশাক, বিনোদন, গ্রেড নির্ভর শিক্ষা ও লৌকিকতা শিক্ষায় যতটা আগ্রহী করে তোলেন; স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জীবন দক্ষতামূলক শিক্ষা দেওয়ায় কম আগ্রহই দেখা যায়। অনেক ব্যবসায়ের প্রধান টার্গেট হলো নারী ও শিশু। শিশুখাদ্যের পসরা এমনভাবে সাজানো হয় শিশুরা প্রলুদ্ধ না হয়ে পারে না। এটা দোষের কিছু না; কিন্তু ব্যবসায়ীরা আরও একটু যৌক্তিক হতে পারে বলে মনে হয়। প্যাকেটজাত শিশুখাদ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বৈজ্ঞানিকভাবে মান নিয়ন্ত্রিত নয়। মান নিয়ন্ত্রণের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতারও ঘাটতি আছে বলে মনে হয়। ফলে ব্যবসায়ীরা ফাঁক-ফোকর গলে পণ্য উৎপাদন করছেন এবং বাজারজাত করছেন। অনেক উৎপাদনকারী বা বিপণনকারীর কোন ট্রেড লাইসেন্সই নেই। থাকলেও নবায়ণ করা নেই। উপজেলা স্যানিটারি অফিসারও শিশুখাদ্যের মান যাচাইয়ের দায়িত্বটাও সঠিকভাবে পালন করছে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে চাকচিক্যময় মোড়কে নিম্নমানের শিশুখাদ্য অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যশিক্ষাটা সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বলে আমি মনে করি। অনেক ভেজাল ও ক্ষতিকর রসায়নজাত শিশুখাদ্য বিনা অনুমতিতে উৎপাদন করে তা পশ্চাদপদ এলাকায় বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত মা-বাবার সন্তানরা এর ভিক্টিম বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্যশিক্ষার অভাবে তারা এগুলোর ক্ষতির কথা জানতে পারছে না। এগুলো শিশুর স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা তৈরি করছে। অন্যদিকে পরিবেশ রক্ষা-সম্পর্কিত জ্ঞানচর্চার অভাবে আমরা যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনা ফেলছি। নদীতে কল-কারখানার বর্জ্য ফেলছি। ফলে আমাদের পরিবেশ-প্রতিবেশ আজ হুমকির মুখে। ডেঙ্গু, ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বরকে বলা হয় অনেকটা এনভায়রনমেন্টাল ডিজিজ। আমাদের পরিবেশ রক্ষা করা মানে আমাদের জীবন বা স্বাস্থ্য রক্ষা। শিক্ষাটা থাকলে মশার প্রকোপ কমে যাবে; রোগ ব্যাধিও কমবে। নিজের প্রয়োজনেই আমাদের স্বাস্থ্যশিক্ষার দরকার। ফেসবুক, গুগল বা ইউটিউব থেকেও এগুলো আমরা অনায়াসে শিখতে পারি। ভালো স্বাস্থ্য, ভালো জাতি- এটাই আমাদের স্লোগান।
আরও পড়ুন: নারী কিংবা পুরুষ কীসে আটকায়?
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ আজ একটি জমদূতের নাম। চিকিৎসক জেনেও এক অদৃশ্য কারণে হরহামেশা এটি লিখছেন। আবার ফার্মেসির দোকানদারেরাও হরহামেশা রোগীকে তা ধরিয়ে দিচ্ছেন। রোগীরাও না বুঝে, না জেনে সেবন করছেন। অনেক সময় রোগী নিজেই ফার্মেসি থেকে কিনে এনে খাচ্ছেন ডাক্তারের কোনো পরামর্শ ছাড়াই। ফলে রোগীদের অসুখটা হয়তো ছেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তার স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে; যা তারা বুঝতেও পারছে না। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক হচ্ছে সামাজিক বোমা। এর মূল কারণ হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করছি না। এতে শিশু ও নারীদের ক্ষতিটা বেশি হচ্ছে। নীতি-নির্ধারকদের এ ব্যাপারে শক্ত ভূমিকা রাখা খুব দরকার। জনগণকেও সচেতন হওয়া অত্যাবশ্যক।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম।
এসইউ/এএসএম