আন্তর্জাতিক

যৌন হয়রানি এড়াতে মেয়েদের ‘আবেদনময়ী আচরণ’ না করার পরামর্শ চীনে

যৌন হয়রানি এড়াতে মেয়েদের ‘উত্তেজক পোশাক না পরা এবং আবেদনময়ী আচরণ না করা’র পরামর্শ দিয়ে তোপের মুখে পড়েছে চীনের একটি স্কুল। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত মুখ খুলতে হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে। তারপরও থামেনি সমালোচনা।

Advertisement

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলির তথ্যমতে, স্কুলটি গুয়াংডং প্রদেশের ঝাওকিং শহরে অবস্থিত। গত বছর সেখানে ‘মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা’ সংক্রান্ত একটি ক্লাস নেওয়া হয়েছিল। সেই ক্লাসে পাঠদানের উপাদানগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এ মাসে। এরপর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক।

আরও পড়ুন>> করাচিতে প্রকাশ্যে নারীকে যৌন হয়রানি

দেখা যায়, পাঠ্যসূচির একটি কাগজে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানির শিকার মানুষেরা ‘ভুগছেন, কারণ তারা আকর্ষণীয় পোশাক পরেন এবং আবেদনময়ী আচরণ করেন’।

Advertisement

এতে আরও লেখা, ‘মেয়েদের স্বচ্ছ বা চটকদার পোশাক পরা এবং হালকা আচরণ করা উচিত নয়’।

ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র সমালোচনা শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই এর জন্য সমাজের রক্ষণশীল মনোভাবকে দায়ী করেছেন। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য পরিস্থিতি গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

আরও পড়ুন>> মণিপুরে দুই নারীকে নগ্ন হাঁটানোর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

চীনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম উইবোতে একজন লিখেছেন, ওই ক্লাসের শিক্ষক সমস্যাপ্রবণ। অন্যরা ভুক্তভোগীদের দোষারপ করার বিপদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তাদের মতে, নারীরা যে পোশাকই পরেন না কেন, যৌন হয়রানির শিকার হলে তাদের ওপরই দোষ চাপানোর চেষ্টা করা হয়।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় জনরোষের মুখে শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে বিবৃতি দেয় স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষ। তারা স্বীকার করেছে, গত বছরের এপ্রিলে স্কুলটিতে বিতর্কিত ওই ক্লাসটি নেওয়া হয়েছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, বক্তব্যটিতে কিছু ‘অনুপযুক্ত অভিব্যক্তি’ ছিল, যা (অনলাইন ব্যবহারকারীদের মধ্যে) ভুল বোঝাবুঝির কারণ হয়েছে। কাউন্টির শিক্ষা ব্যুরো এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ‘ধিক্কার জানিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিয়েছে’। এছাড়া স্কুলটিকে তাদের পাঠ্যসূচি পর্যালোচনা এবং শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছে।

আরও পড়ুন>> আফগানিস্তানে বিউটি পার্লার বন্ধের নির্দেশ

তবে সরকারি এই বিবৃতিকেও সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করেছেন অনেকে। তাদের মতে, কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ শব্দের ব্যবহার যথোপযুক্ত ছিল না। ওই ক্লাসে পাঠদানের উপাদানগুলো নির্দোষ নয়। বরং তা সমাজের বাস্তবতারই প্রতিফলন।

এক সমালোচক লিখেছেন, অনলাইনের মানুষ ভুল বোঝেনি। দায়ীদের সাজা হয়েছে খুবই সামান্য।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মুখ খোলেনি স্কুলটির কর্তৃপক্ষ।

সূত্র: সিএনএনকেএএ/