চার বছর আগে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার মধ্যকাইচাইল মাদরাসা মসজিদে চাচা রওশন আলী ও তার ভাতিজা মিরাজুল ইসলাম তুহিনসহ অন্যরা আসরের নামাজ শেষে বের হয়ে মাদরাসা মাঠে আসেন। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামি আউয়াল মোল্লা ও হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়সহ অন্য আসামিরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আসামি আউয়াল মোল্লার হুকুমে আসামি হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়সহ অন্য আসামিরা তাদের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও শর্টগান দিয়ে উপর্যুপুরি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই রওশন আলী ও মিরাজুল ইসলাম তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা করেন।
Advertisement
এ ঘটনায় করা হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে আজ রোববার (১৩ আগস্ট) রায়ের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এ রায় ঘোষণা করবেন। রায়ে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষ বলছে, এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, আসামিরা খালাস পাবেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবু আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, এ মামলায় ৩৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, এ মামলার কোনো অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। এ মামলায় আসামিদের কোনো স্বীকারোক্তি নেই। সাক্ষীদের বক্তব্যে কোনো মিল নেই। আসামিরা বেকসুর খালাস পাবেন বলে প্রত্যাশা আমাদের।
Advertisement
২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নগরকান্দার মধ্যকাইচাইল মাদরাসা মসজিদে নিহত রওশন আলী ও মিরাজুল ইসলাম তুহিনসহ অন্যরা আসরের নামাজ শেষে বের হয়ে মাদরাসা মাঠে আসেন। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামি আউয়াল মোল্লা ও হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়সহ অন্য আসামিরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আসামি আউয়াল মোল্লার হুকুমে আসামি হানিফ মিয়া ওরফ হৃদয়সহ অন্যন্য আসামিরা তাদের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও শর্টগান দিয়ে উপর্যুপুরি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই রওশন আলী ও মিরাজুল ইসলাম তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন গোলাম রসুল বিপ্লব, গোলাম মাওলাসহ আরও সাত-আটজন।
এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২২ জুলাই পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। এরপর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-১ এ পাঠানো হয়। পরে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-৪ এ বদলি করা হয়। মামলার বিচার চলাকালীন আদালত ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।
এ মামলার ১৬ জন চার্জশিটভুক্ত আসামি। তারা হলেন- আউয়াল মোল্লা, হানিফ ওরফে হৃদয়, এনামুল হাসান মিয়া, রেজাউল মাতুব্বর, কাইয়ুম মিয়া, রিকুল ইসলাম ওরফে রবিন শিকদার, দুলাল মিয়া, হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব মিয়া, পাঁচু মিয়া, পারভেজ মিয়া, আসাদুজ্জামান সিকদার, হাফিজুর রহমান ওরফে তুষার মিয়া, তুহিন মিয়া, শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ মিয়া, কে এম রাজু আহমদ ওরফে কোরবান মিয়া, রবিউল ইসলাম ওরফে মশিউর মিয়া।
এ মামলার প্রধান আসামি আউয়াল জামিনে রয়েছেন। আসাদুজ্জামান নামের এক আসামি মারা গেছেন। এ মামলায় আসামি পাঁচু মিয়া, রাজু ও রবিউল কারাগারে রয়েছেন। মামলার শুরু থেকে আসামি এনামুল, পারভেজ, হাফিজুর, তুহিন ও শহিদুল পলাতক রয়েছে। এছাড়া জামিনে গিয়ে আসামি হৃদয়, রেজাউল, কাইয়ুম, রবিন, দুলাল ও হাবিবুর পলাতক রয়েছেন।
Advertisement
জেএ/এমআইএইচএস/এমএস