খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি-রাজাপুর অংশের অবস্থা বেহাল। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গেছে। বাড়ছে ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের খানাখন্দ। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এসব খানাখন্দে পানি জমে যান চলাচলে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। খানাখন্দ মাড়িয়ে সড়কে প্রতিদিন চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এমনকি ভাঙা অংশগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে আহতও হচ্ছেন অনেকে।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজাপুর উপজেলার বাগড়ি বাজার এলাকা থেকে শুরু করে বাঁশতলা হয়ে বাগড়ি স্কুল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কসহ বিভিন্ন স্থানের কয়েক কিলোমিটার অংশে পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে হরহামেশাই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক।
ওই রুটের বাসচালক মাহবুব, আলমগীর ও সাইদুল জাগো নিউজকে জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দ্রুত সময়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে হচ্ছে। কিন্তু সড়কে ভাঙাচোরা থাকায় যানবাহন চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে। হুটহাট গাড়ির যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খানাখন্দ থাকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে তিন চাকার ছোট যানবাহনগুলো।
স্থানীয় মোটরসাইকেল আরোহী কালাম, মিজু ও ফিরোজ জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যা দূর থেকে অনেক সময় চোখে পড়ছে না। ফলে এসব রুটে নতুন কোনো চালক এলেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন।
Advertisement
ইজিবাইক চালক সালাম, হাসিব ও আল আমিন জানান, সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খানাখন্দে গাড়ির চাকা আটকে যায়, স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালানো যায় না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীচাপ বেড়েছে। কয়েক কিলোমিটারের সড়ক সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ যেমন কমতো, অল্প সময়ে নিরাপদে যাত্রীদের গন্তব্যেও পৌঁছে দেওয়া যেতো।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সড়ক বেহাল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় শিগগির সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। খানাখন্দ থাকায় যানবাহনের কর্দমাক্ত পানি ছিটে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা শিক্ষার্থীরাসহ অন্য পথচারীরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় সড়কের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এতে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই ওই এলাকায় প্রাইভেটকার, ট্রাক ও বাস দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অসংখ্য যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
তারা বলছেন, মেরামতের অংশ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাঝেমধ্যে বালু ও পাথর ফেলে সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করলেও তাতে কোনো সুফল মিলছে না। বরং বৃষ্টির পানির সঙ্গে বালু আর লাল মাটি মিশে সড়কজুড়ে কর্দমাক্ত অবস্থা তৈরি হচ্ছে।
Advertisement
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, কয়েক বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। এখন সড়কের বিভিন্ন স্থানে আবার খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি খানাখন্দ যেমন বাড়ছে সড়কটিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিগগির সংস্কার করে সড়কটি স্বাভাবিক যান চলাচলের উপযোগী করা হবে।
মো. আতিকুর রহমান/এমকেআর/এএসএম