ভোলায় দেখা মিলেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক অন্ধভক্তের। বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসায় তিনি প্রায় ২৩ বছর আগে একটি দোকান খুলে এক টাকায় বিক্রি করে আসছেন চা। শুধু চা বিক্রি নয়, দোকানে আসা ক্রেতাদের শোনান বঙ্গবন্ধুর গল্প।
Advertisement
বঙ্গবন্ধুভক্ত ওই চা বিক্রেতার নাম আলম মোর্শেদ। তিনি ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের মধ্য চরপাতা গ্রামের বাসিন্দা। আলম মোর্শেদ তার গ্রামের নামও রেখেছেন ‘মুজিবনগর’।
কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৩ বছর আগে বাড়ির সামনের সড়কে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে একটি চায়ের দোকান দেন আলম মোর্শেদ। এরপর থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসায় এক টাকায় চা বিক্রি করে আসছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৩৩ বছর ধরে এক টাকায় চা বিক্রি করছেন মহির উদ্দিন
Advertisement
আলম মোর্শেদ জাগো নিউজকে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি ছোটবেলা থেকেই তার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ছিল। সেজন্য প্রায় ২৩ বছর আগে তিনি চায়ের দোকানটি খোলেন। দোকান দেওয়ার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তিনি এক টাকায় চা বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে। চায়ের সব উপকরণের দাম দিন দিন বাড়লেও চায়ের দাম বাড়াননি আলম মোর্শেদ।
পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের জনক চা বিক্রেতা আলম মোর্শেদ। এদের মধ্যে তিন ছেলে চাকরি করেন। সংসার খরচ তারাই দেন। এজন্য সংসারে কিছুই দিতে হয় না আলম মোর্শেদের। এক টাকায় চা বিক্রি করতে গিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ টাকা লোকসান হলেও আক্ষেপ নেই তার।
এ বিষয়ে আলম মোর্শেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন ততদিনই এক টাকায় চা বিক্রি করে যাবো।’
আরও পড়ুন: রং চায়ে ভাগ্য ফিরেছে সবিতার
Advertisement
তবে তিনি তার গ্রামের নাম ‘মুজিবনগর’ রাখলেও সরকারিভাবে গ্রামটি এখনো ‘মধ্য চরপাতা’ নামই রয়ে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারিভাবে গ্রামটির নাম ‘মুজিবনগর’ স্বীকৃতি চান তিনি। আলম মোর্শেদের স্ত্রী শিউলী বেগম বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার স্বামীর এমন ভালোবাসা দেখে তিনিও বঙ্গবন্ধুর ভক্ত হয়ে গেছেন। তাদের সংসারে এত বছরেও কোনো উন্নতি না হলেও দুঃখ নেই তার।
তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৪০-৫০ ফ্লাস্ক চা করে স্বামীর দোকানে পাঠান তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে তাদের দোকানে চা পান করে প্রশংসা করেন। এতেই তিনি খুশি।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়ন থেকে আসা গোলাম মাহামুদ শাওন বলেন, ‘আমি শুনেছি দৌলতখান উপজেলার এই গ্রামে মাত্র এক টাকায় চা বিক্রি করা হয়। বঙ্গবন্ধুর গল্পও শোনা যায়। তাই এসে চা পান করেছি। বঙ্গবন্ধুর গল্পও শুনলাম।’
আরও পড়ুন: চা বিক্রি করে কোটিপতি পরীক্ষায় ফেল করা যুবক!
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, মো. রুবেল ও শাহিন আলম বলেন, তারা প্রতিদিনই আলম মোর্শেদের দোকানে এক টাকায় চা পান করতে যান। তার উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয়।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, জাতির জনকের নামে একটি গ্রামের নাম করার জন্য আলম মোর্শেদ যে প্রচেষ্টা ও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এটি স্বাগতম জানানোর মতো। জাতির জনকের নামে আলম মোর্শেদের গ্রামটির নামকরণের জন্য আমি দৌলতখান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেবো। আশা করি আলম মোর্শেদের দাবি পূরণ হবে।
এসআর/এএসএম