হাওয়াই দ্বীপের মাউই কাউন্টিতে ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আরও কয়েকশ লোক এখনো নিখোঁজ। তাছাড়া অগ্নিনির্বাপন কর্মীরা এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
Advertisement
গভর্নর জোস গ্রিন দিনটিকে ‘হৃদয়বিদারক দিন’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক নগরী লাহাইনার অন্তত ১৭০০ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে ও হাজার হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তিনি জানান, শহরটির ৮০ শতাংশ এলাকা দাবানলের আগুনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
গত মঙ্গলবার এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছিল। পরে হারিকেন ডোরার প্রভাবে তৈরি হওয়া প্রচণ্ড বাতাসের কারণে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
Advertisement
আরও পড়ুন>পুড়ে ছাই মাউয়ি শহর, মৃত বেড়ে ৫৩
এরপর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৪ হাজার পর্যটককে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। তবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখনো অনেক মানুষের সন্ধান পায়নি কর্তৃপক্ষ। আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া লাহাইনা শহরের বাসিন্দারা বলেছেন, তাদের বাড়ির দিকে যখন দাবানলের আগুন এগিয়ে আসছিল তখনও তাদের হুঁশিয়ার করার জন্য কোনো সতর্কসংকেত দেওয়া হয়নি।
শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাউই-এর প্রায় এগার হাজার মানুষ এই দুর্যোগের মধ্যে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে।
মাউই কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বাইসেন ঘরবাড়ি ছেড়ে যারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে তাদের সতর্ক করে এখনই বাড়ি না ফিরতে বলেছেন।
Advertisement
মাউই দ্বীপের কর্তৃপক্ষ বলেছেন, এই দাবানলে যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে অনেক বছর ও শত শত কোটি ডলার লাগবে। গভর্নর গ্রিন বলেছেন, এটিই সম্ভবত হাওয়াই দ্বীপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
গভর্নর জোস গ্রিন বলেছেন, বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া হাজার হাজার মানুষের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করতে হবে।
প্রাথমিকভাবে হোটেলগুলোতে দুই হাজার কক্ষ চাওয়া হয়েছে তাদের জন্য।
এছাড়া যেসব এলাকায় লোকজন এখনো বসবাস করতে পারছে সেখানকার মানুষদের তাদের বাড়ির অতিরিক্ত কক্ষে আশ্রয়হীনদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন>নামাজের সময় মসজিদে ধস, নাইজেরিয়ায় ৭ মুসল্লির মৃত্যু
তিনি বলেন, এটা হাওয়াই দ্বীপের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মৃতের সংখ্যা এখনো বাড়ছে। শত শত ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।
তিনি বলেন আরও বলেন, লাহাইনাকে আবার নতুন করে গড়ে তুলতে বহু বছর লাগবে। এই শহরটিই মূলত দাবানলের কেন্দ্রবিন্দু।
গ্রিন বলেন, লাহাইনার ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখলে আপনি বিস্মিত হবেন। সব ভবনই নতুন করে তৈরি করতে হবে। এটা হবে একটা নতুন লাহাইনা।
অন্যদিকে স্থানীয় কোস্ট গার্ড বলেছে, তারা উপকূলীয় শহর লাহাইনা থেকে সতেরো জনকে উদ্ধার করেছে। তীব্র গরম থেকে বাঁচতে সেখানে অনেকে সাগরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, ঠিক কতো মানুষ এখনো নিখোঁজ আছেন তা এখনো তাদের জানা নেই। তবে সংখ্যাটি এক হাজারের কম হবে না।
পুলিশ প্রধান জন পেটেলিয়ের অবশ্য বলেছেন, যে এর মানে এই নয় যে এসব মানুষ মারা গেছে।
পুরো দ্বীপে এখন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট নেই। সে কারণে লোকজনকে খুঁজে পাওয়াটা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে মাউই- এর বনবিভাগ জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে বনাঞ্চলের একাধিক জায়গায় দাবানলে শত শত একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
অনেক জায়গায় ছোট ছোট আকারে আগুন জ্বলছে। পরিস্থিতি এখনো বিপজ্জনক। মন্তব্য করে লোকজনকে ‘আগুন জোন’ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে মাউই বনবিভাগের প্রধান ব্রাড ভেনচুরা।
এমএসএম