দাবানলের আগুনে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপ। সেখানে এখন পর্যন্ত ৫৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দ্বীপটির পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত নয় যে, ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছে। তবে তিনি ধারণা করছেন এই সংখ্যা প্রায় এক হাজার।
Advertisement
পুরো দ্বীপের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হয়েছে। সে কারণে লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। হাওয়াইয়ের গভর্নর জোস গ্রিন বলেন, দুই হাজারের বেশি মানুষ বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেছেন।
আরও পড়ুন: হাওয়াই দ্বীপে দাবানলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬
পশ্চিম মাউয়ি শহরে প্রায় ১১ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়া প্রায় ১৭০০ ভবন আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গভর্নর জোস গ্রিন এই দাবানলকে হাওয়াই রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটা একটি হৃদয়বিদারক দিন।
Advertisement
তিনি বলেন, পর্যটন শহর লাহাইনার প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ১৪ হাজারের বেশি পর্যটককে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই অঙ্গরাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্য তহবিল গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকেই দাবানলের আগুন থেকে বাঁচতে সাগরে ঝাঁপ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড জানায়, অনেককে সাগরের পানি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে মাউয়ি কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বিসেন জুনিয়র বলেন, অনেক বাড়ি-ঘর এবং ব্যবসায়িক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ওই শহরে ১২ হাজার মানুষের বসবাস। স্থানীয় এক বাসিন্দা সেখানকার গণমাধ্যমকে বলেন, শহরের প্রায় সব নৌকাই পুড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: হাওয়াই দ্বীপে দাবানলে ৬ জনের মৃত্যু, পুড়েছে ঐতিহাসিক শহর
Advertisement
হাওয়াই নিউজ নাউকে ক্রিসি লোভিট নামের ওই বাসিন্দা বলেন, মনে হচ্ছিল যেন এটা কোনো মুভির দৃশ্য। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, মাউয়ি দ্বীপে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই নিরূপণ করা বেশ কঠিন। মেয়র রিচার্ড বিসেন সতর্ক করেছেন যে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রায় ২ হাজার ১০০ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছেন।
লাহাইনা শহরে বসবাসকারী স্বজনদের নিয়ে অনেকেই বেশ চিন্তিত। কারণ অনেকেই এখনও নিখোঁজ। হাওয়াই নিউজ নাউকে তিয়ারা লরেন্স নামের একজন বলেন, আমি এখনো জানি না যে আমার ছোট ভাই কোথায়। আমার বাবা (সৎবাবা) কোথায় সেটাও আমি জানি না। আমি জানি লাহাইনায় থাকা প্রত্যেকের বাড়ি পুড়ে গেছে।
টিটিএন