বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মশতবার্ষিকী আজ (১০ আগস্ট)। ১৯২৪ সালের এই দিনে নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এ চিত্রশিল্পী। তার বাবা মেছের আলীর নান্দনিক সৃষ্টির ঘষামাজার মধ্য দিয়ে ছোট বেলার লাল মিঞার (সুলতান) চিত্রাঙ্কনে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ হয়।
Advertisement
সুলতানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এরই মধ্যে দিনটি উদযাপনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী।
আরও পড়ুন: শিল্পী এসএম সুলতানের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত
শিল্পী সুলতান যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন এবং তার ছবি ভারতের সিমলা, পাকিস্তানের লাহোর, করাচি, নিউইয়র্ক, বোস্টন, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকায় খ্যাতনামা বিভিন্ন চিত্রশিল্পীর সঙ্গে যৌথভাবে প্রদর্শিত হয়।
Advertisement
সুলতান ১৯৮০ সালে নিজ বাড়িতে শুরু করেন শিশুস্বর্গের নির্মাণকাজ। ১৯৯২ সালে ৯ লাখ মতান্তরে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নিজ উদ্যোগে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের ‘ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ’ নামে দ্বিতল নৌকা নির্মাণ করেছিলেন। এ নৌকায় তিনি শিশুদের নিয়ে চিত্রানদীতে ভ্রমণ করতেন এবং নৌকায় বসেই তাদের চিত্রাঙ্কন শেখাতেন। সুলতানের শিল্পকর্মের বিষয়বস্তু ছিল বাংলার কৃষক, জেলে, তাঁতি কামার, কুমার, মাঠ, নদী, হাওর, বাঁওড়, জঙ্গল, সবুজ প্রান্তর ইত্যাদি।
শিল্পী এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সম্মাননা হিসেবেও স্বীকৃতি পান তিনি। সুলতানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তার নিজ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা।
আরও পড়ুন: নড়াইলে এসএম সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন
দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। নড়াইলের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় তাকে সমাহিত করা হয়।
Advertisement
হাফিজুল নিলু/জেএস/এএসএম