মতামত

পরিবারগুলোতে ‘সন্তান তোষণ’ নীতি বাড়ছে

আমার বাবা বলতেন, তোমরা মানে সন্তানেরা আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। তোমরা আমাদের কাছে ঠিক কতটা প্রিয়, তা বুঝতে পারবে যেদিন তোমরা বাবা-মা হবে। তোমরা এখন বুঝতে পারবে না যে সন্তানের সামান্যতম দুঃখ ও কষ্টে বাবা-মা কতটা বিচলিত হয়ে পড়েন এবং কীভাবে সবচেয়ে বেশি কিছু দিয়ে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে চান। বাবা বলতেন, ‘কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক কে বলে তাহা বহুদূর। মানুষেরই মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর।’ সন্তান যখন ভালো কিছু করে সেটাই আমাদের কাছে স্বর্গের সুখের মতো। আর যখন তোমরা কষ্ট পাও, ব্যর্থ হও, আমাদের কাছে সেটাই নরকের মতো মনে হয়।

Advertisement

সমাজের সব শ্রেণির অভিভাবকদের মধ্যেই সন্তানের প্রতি অপাত্য স্নেহ লক্ষ্য করা যায়। মা-বাবা তাদের সন্তানকে বুক দিয়ে আগলে রাখেন, নিরাপত্তা দেন, সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ভরিয়ে দিতে চান। তারা স্বপ্ন দেখেন তাদের সন্তান একদিন সবার মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তবে বিপদটা হচ্ছে যে অনেক পরিবারেই সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের এই ভালোবাসা ও সন্তানকেন্দ্রিক নির্ভরতা বাড়তে বাড়তে এমন এক স্তরে পৌঁছেছে, যেখানে বাবা-মা সন্তানের কাছে প্রায় জিম্মি হয়ে গেছেন।

সন্তান বড় হওয়ার পাশাপাশি তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ যতোটা না তৈরি হচ্ছে, এর চাইতে বেশি দেখা যাচ্ছে বাবা-মাকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রবণতা। নিজেদের ভালোমন্দ, চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপারটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে একক পরিবার ও নগরকেন্দ্রিক পরিবার প্রথা শিশুকে অনেকটাই আত্মকেন্দ্রিক করে তুলছে।

একক পরিবারে শিশু বড় হতে হতে বাবা-মায়ের কাছ থেকে যে অপরিমিত স্নেহ-আহ্লাদ পেতে শুরু করে, তাতে তার ধারণা হয় আমার বাবা-মা আমাকে পেয়েই ধন্য হয়েছেন। তাদের দায়িত্ব আমাকে ঝুড়িভরা খেলনা, খাওয়া, আলমারি ভরা কাপড়, ট্যাব-মোবাইল ফোন, গেমসহ আরও বিনোদন দেওয়া। ধনী পরিবারগুলোতো বটেই, মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোতেও ‘সন্তান তোষণ’ নীতি বাড়ছে। শিশুকে ভালোবাসা মানে তাকে তোষণ করা নয়। আমরাই শিশুকে শেখাই ‘তোমার জন্য আমরা আছি’ কিন্তু এটা শেখাই না যে ‘আমাদের জন্য তোমরা আছ’।

Advertisement

আধুনিক সন্তানরা স্বাধীনভাবে থাকতে চাইছে, মত প্রকাশ করছে, বাবা-মাকে অনেক কিছু মেনে নিতে বাধ্য করছে। কিন্তু নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই ব্যর্থতার দায় অভিভাবকদেরই নিতে হবে। আমরা যারা এখন মধ্যবয়সী বা ষাটের কাছাকাছি বয়স, তারা পেছনের দিকে তাকালে বুঝতে পারি, কতটা বদলে গেছে আমার সন্তানের কাছে দায়িত্ববোধ ও আমার দায়িত্ববোধের সংজ্ঞা।

আমি বা আমরা প্রায় অনেকেই বড় হওয়ার পাশাপাশি বুঝতে চেষ্টা করেছি পরিবারে আমার দায়িত্ব কী? আমি যে আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে এত ভালোবাসা ও সুখ-সুবিধা পাচ্ছি, কবে আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারবো? প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক তারা যেন আমাদের কাঁধে তাঁদের ভরসার হাতটা রাখতে পারেন। আমরা যেমন তাঁদের কাছ থেকে পেয়েছি, এর কিছু একটা অংশ যেন তাঁদের হাতে তুলে দিতে পারি।

১৯৮৪ সালে আমি যখন এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন আমাদের পরিবারে আর্থিক কষ্ট চলছিল। জেনারেল হিস্ট্রির একটি রেফারেন্স বই খুব দরকার ছিল। আব্বাকে নিয়ে নীলক্ষেতে পুরোনো বইয়ের দোকানে খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না। অগত্যা চলে আসতে চাইলাম। কিন্তু আব্বা আমার আপত্তি সত্ত্বেও নিউমার্কেটের বইয়ের দোকান থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে বইটি কিনে দিলেন। অট্টহাসি দিয়ে বললেন ‘সন্তানের শিক্ষার প্রয়োজন সবচেয়ে আগে। প্রয়োজনে দুইদিন আমিষ খাবো না।’

সেদিন রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। বারবার মনে হয়েছে এত আর্থিক কষ্টের মধ্যে বাবা আমাকে এই দামি বইটি কিনে দিয়েছে, আমি যেন ভালো রেজাল্ট করে এই ভালোবাসার জবাব দিতে পারি। যেন বড় হয়ে কাজ করে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি। ঠিক এই অনুভূতিটাই যেন হারিয়ে যাচ্ছে আধুনিককালের সন্তানদের বোধ থেকে। হয়তো তারা শুধু পেতেই শিখেছে, দিতে শেখেনি। আর এজন্য দায়ী আমাদের প্যারেন্টিং।

Advertisement

এখন প্রায় সব ঘরেই একজন/ দু’জন করে সন্তান এবং এরা বাবা-মায়ের চোখের মণি হওয়ায় বাবা-মা মোটামুটিভাবে তাদের সন্তানকে সাধ্যমতো বা সাধ্যের বাইরে গিয়েও ভালো রাখার চেষ্টা করেন। সন্তান বড় করার সময় আমরা প্রায় সবাই তাদের রূপকথার গল্প শুনিয়ে বড় করি, বলি যে তোমরাই আমাদের গল্পের রাজপুত্র, রাজকন্যা। তোমাদের চাওয়া-পাওয়া, ভালো থাকা, বড় হওয়াই আমাদের কাছে সব।

তাই অনেক অভিভাবক শত কষ্ট হলেও বুঝতে দিতে চান না যে, তাদের প্রকৃত সামর্থ্য কতটা এবং সংসারের চাহিদা সামলাতে কতটা বেগ পেতে হচ্ছে। সন্তানকে বুঝতে দিতে চান না যে বাবা-মা তাদের কতটা দিতে পারবেন এবং বাবা-মায়ের কাছে তাদের কতটা চাওয়া উচিত। একধরনের ধোয়াশার মধ্যেই আমরা আমাদের সন্তানের মুখে দুধ-ভাত তুলে দিতে চাই।

রাজপুত্র ও রাজকন্যাদের জীবন যেমন জৌলুসে ঠাসা, তেমনি আমাদের শিশুরাও মনে করতে শুরু করে তাদের জীবনটাও বোধকরি তেমনই হবে। আলো ঝলমলে, রাজকীয়, চারদিকে শুধু আনন্দ, বিত্ত, অর্থ ও প্রতিপত্তি। সুযোগ-সুবিধা ও অতিরিক্ত প্রশ্রয় দিয়ে আমরা অনেকেই সন্তানকে এমনভাবে বড় করতে থাকি যে, সন্তান বাবা-মায়ের ক্ষমতার কথা না চিন্তা করেই আবদার করে। এরপর কান্নাকাটি করে, না দিতে পারলে চাপ দেয়, দিতে না পারার ব্যর্থতার জন্য বিদ্রোহ করে এবং আত্মহত্যাও করে।

আমার পরিচিত একজন তরুণী ভালোবেসে একটি লম্পট ছেলেকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়, বাবা-মায়ের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও। তার বাবা খুব আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘মেয়ে চাইলে আকাশের চাঁদ পেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করতাম। কখনো কোন আবদারে না বলি নাই, বুঝতে দেইনি সংসারে অভাব কী- আর আজকে আমার মেয়ে আমার কথা কানেই তুলছে না। উপরন্তু খুব খারাপ ব্যবহার করছে।’ বিরক্ত হয়ে সেদিন বলে ফেলেছিলাম মেয়ে চাইলে আকাশের চাঁদ পেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করাটাই আপনার ভুল ছিল এবং আজকে এর মাশুল দিচ্ছেন।

সন্তানের কাছে প্রকাশ করতে হবে যে, আমরা তাদের ভালোবাসি, তার মতামতকে সম্মান করি। সন্তানের ভালোর জন্য, খুশির জন্য বাবা মা অবশ্যই সর্বোচ্চ কিছু করার চেষ্টা করবেন, কিন্তু সেটা যেন বাবা-মায়ের সাধ্যের বাইরে গিয়ে না হয়। শিশু সুন্দর পছন্দের কিছু একটা চাইতেই পারে, না দিলে কাঁদতে বা মন খারাপ করতে পারে। কিন্তু এর বেশি যেন কিছু না করে, সেটা সন্তানকে বুঝাতে হবে। চাহিবা মাত্র যদি যেকোনো কিছু সন্তানের সামনে হাজির করা হয়, তাহলে সন্তানের এ অভ্যাস একদিন বুমেরাং হতে পারে কারণ চাহিদা তখন চাপে পরিণত হবে।

একটা বয়স পর্যন্ত মা-বাবা বাচ্চাকে অতিরিক্ত আহ্লাদ-আদর দেন। এরপর সন্তান যখন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছে, তখনই শুরু হয় সংঘাত। কারণ তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্তানের দাবি-দাওয়া ও চাহিদার সাথে অভিভাবকের মতের মিল নাও হতে পারে। এদিকে শিশু এই জেনে বড় হয় যে, তার অবস্থান পরিবারে একচ্ছত্র, তার চাওয়াই বাবা-মায়ের কাছে শেষ কথা। তাই সে যা বলবে, তাই হবে।

সেখানে কোনো কারণে ব্যত্যয় হলে অভিভাবকের সাথে সন্তানের দ্বন্দ্ব শুরু হয়, বাড়ে মানসিক দূরত্ব। বাবা-মা যখন তার চাহিদা মেটাতে পারেন না বা কম পারেন, তখনই ছেলেমেয়েরা নানাভাবে বিপথগামী হতে পারে। এই চাওয়া ও পাওয়ার ফারাক হওয়ার জন্য সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের মানসিক যোগাযোগ কমে যায়।

ইন্টারপারসোনাল যোগাযোগ পড়তে গিয়ে আমরা জেনেছি অন্যের যে আচরণে আমরা মনোযোগ দেই, সে আচরণ করতে তারা আরও উৎসাহিত হয়। সন্তানের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। তাদের প্রতি এই মনোযোগ দেওয়ার ব্যাপারটা আবদার পূরণ করে, প্রশংসা করে, পুরস্কার দিয়ে ও আদর করেও হতে পারে।

আবার মন্দ কাজের ক্ষেত্রে ‘না’ বলার মাধ্যমে বা ‘স্পষ্ট করে কথা বলা’র মাধ্যমেও ফিডব্যাক দেওয়া যেতে পারে। সন্তান যেন বুঝতে পারে তার এই আচরণ বাবা-মায়ের পছন্দ হয়নি বা কাঙ্ক্ষিত নয়। এভাবে সে তার আচরণ, জেদ, চাহিদাকে সংযত করতে শিখবে। সন্তানের অন্যায় চাহিদা ও সেটাকে কেন্দ্র করে বেয়াদবি করাকে একেবারেই প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক নয়। আচরণ যদি অতিরিক্ত অগ্রহণযোগ্য হয় তখন তার আদর ভালোবাসাসহ প্রাপ্য সুবিধা কমিয়ে দিতে হয়।

আজকাল অভিভাবকদের কেউ কেউ নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য নৈতিকতাকে বিসর্জন দেন এবং সেই পথে উপার্জিত পয়সা দিয়ে সন্তানকে সুখ কিনে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাতে সন্তানের ক্ষতি ছাড়া লাভ হয় না। অভিভাবকের মূল্যবোধের ভিত্তি দুর্বল হলে, সেই সন্তান কখনো ঠিক পথে বড় হতে পারবে না। অনেক অভিভাবক এটা ভুলে গিয়ে যেভাবে হোক টাকা কামাই করে সন্তানের পেছনে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করেন।

সন্তানকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু দিয়ে সুখী করার চেষ্টা করা ও সংসারের চাহিদা বুঝতে না দেওয়াটা একধরনের অপরাধ, যা অনেক অভিভাবক করেন, কথাটা বলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। কথা প্রসঙ্গে উনি বলেছিলেন পড়ানোর সুবাদে তিনি বুঝতে পেরেছেন যেসব ছেলেমেয়ে পরিবারে চাহিদা বুঝে বড় হয়েছে, তারা অনেকটাই সহনশীল স্বভাবের হয়।

নিজেকে দ্রুত গড়ে তোলার চেষ্টা করে। তারা নিজের ও পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর কথা ভাবে এবং সেই মতো কাজ করে। কিন্তু যেসব ছেলেমেয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেয়ে বড় হয়, তারা কোনধরনের অপ্রাপ্তি মেনে নিতে পারে না। এরা বাবা-মায়ের ওপর এমন চাপ সৃষ্টি করে, যা জিম্মি করার শামিল হয়ে যায়।

জীবনের বাস্তবতায় দেখেছি আমাদের বাবা-মায়েরাও সন্তানকে সর্বোত্তম সুখ দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কিন্তু কীভাবে তারা আমাদের জন্য সুখ জোগাড় করছেন, সেই পরিস্থিতি লুকাতেন না। তাদের কষ্টের কথা, অভাব-অনটন ও ক্ষমতার কথা আমাদের বুঝতে দিতেন। বাবা-মায়েরা যেটুকু দিতে পারছেন, সেটার পেছনে যে তাদের পরিশ্রম আছে, সেই বিষয়টা স্পষ্ট করে দিতেন। বলতেন, পরিবারে সবার চাহিদা বুঝে চলতে হবে, সবার সাথে আনন্দ, দুঃখ, শোক, সম্পদ ভাগ করে নিতে হবে।

আসল কথা হলো সন্তানকে জীবনে ‘চাহিদা’ বা ‘প্রয়োজন’ ব্যাপারটা বুঝতে দিতে হবে। সেইসাথে বুঝাতে হবে কোনোকিছু পাওয়ার সুখ কত বেশি। অনেক অভিভাবক সন্তানকে প্রয়োজনের তুলনায় এতো বেশি সুখ দেওয়ার চেষ্টা করেন যে, তখন শান্তিটা চলে যায়। অতিরিক্ত পেলে মানুষ পাওয়ার আনন্দ বুঝতে চেষ্টা করে না, শেখে না ধন্যবাদ দিতে। মনে করে এ পাওয়াটা তাদের অধিকার এবং কিছু দিতে না পারাটা হয়ে দাঁড়ায় বাবা-মায়ের ব্যর্থতা।

অনেক সময় দেখা যায় বাবা-মা তাদের ব্যস্ততা ও অসচেতনতার কারণে ব্যক্তিগতভাবে সময় দিতে পারেন না। সময় দিতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে সন্তানের হাতে তুলে দেন অপরিমিত অর্থ, প্রাচুর্য ও ব্যাপক স্বাধীনতা। এই প্রশ্রয় সন্তানকে করে তোলে বেপরোয়া, দুর্বিনীত ও অপরাধী। অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানকে ‘সময় দেওয়ার পরিবর্তে ফ্যাসিলিটিস দেওয়ার’ ব্যাপারে বেশি উৎসাহী থাকেন। তারা মনে করেন এটাই যথেষ্ট প্যারেন্টিং।

জীবনে আমরা যা চাই, যেভাবে চাই, যতোটুকু চাই তা সবটাই যে মানুষ পাবে, তা কিন্তু নয়। এই সত্যটা সন্তানকে একটু একটু করে বোঝাতে হবে। সন্তানকে বুঝতে হবে চাইলেই সবকিছু দিতে বাবা-মা বাধ্য নয়। সন্তানকে বুঝতে হবে মা-বাবা কঠোর পরিশ্রম করে দুর্যোগ-দুর্বিপাক থেকে পরিবারকে আগলে রাখেন। যে মা শুধু গৃহস্থালি সামলান, তিনিও সন্তানের ও পরিবারের সুখের জন্য জীবনকে উৎসর্গ করেন।

কোনো একটি প্রবন্ধে পড়েছিলাম ‘সাধ্যের বাইরে যে সাধ তা কালে পূরণ হবার নয়, সাধ্যের মধ্যেই আছে সকল সত্য।’ বাবা-মায়ের ভালোবাসাকে জিম্মি করে সন্তান বাড়তি কিছু যেন দাবি না করে। উচ্চবিত্ত সহপাঠী, বন্ধু, প্রতিবেশী কিংবা পরিচিত কেউ কী ব্যবহার করছে, তাদের সম্পদ কতটা আছে তা অনুকরণ করার মানসিকতা নিয়ে যেন সন্তান বড় না হয়।

আমরা যারা জীবনের অনেকগুলো বছর পার হয়ে এসেছি, বাবা-মা হয়েছি, সন্তানকে বড় করেছি, যুগের নানা পরিবর্তনের ধারায় নিজেরাও পরিবর্তিত হয়েছি। কিন্তু মনে রাখার চেষ্টা করেছি ‘সাধ্যের মধ্যেই আছে সকল সত্য’। সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্কটা হতে হবে পারস্পরিক। ‘দেবে আর নেবে, মিলাবে মিলিবে, কিছুই যাবে না ফেলা।’

৯ আগস্ট, ২০২৩লেখক: যোগাযোগকর্মী।

এইচআর/এএসএম