কেটে যায় সব আঁধার
Advertisement
তুমি আছ বাহুর বন্ধনে, হৃদয় স্পন্দনেতুমি আছ সর্বব্যাপী আনন্দ-উল্লাসেতুমি আছ সব সফলতার গণ্ডি পেরিয়ে আরও সম্ভাবনার দিকেতুমি আছ শ্রমে-ঘামে নিরন্তর সংগ্রামে।
তুমি আছ চাঁদ আর সূর্যালোকেতুমি সর্বজয়ী, আছ সকল দুঃখ-কষ্ট অবসানেতুমি আছ দর্পণে, কারণ আমি কাঁদলে তুমিও কাঁদোতুমি আছ শব্দের মিছিলে-মিছিলে।
তুমি আছ সুরভিত দেবী ছন্দে, বজ্রাসনেতুমি আছ মায়াবী হরিণীর চোখের তৃষ্ণায়তুমি আছ মুক্তির স্বপ্নে সম্মুখ সমরেতোমার পথের দিকে তাকালে কেটে যায় সব আঁধার।
Advertisement
দুঃখের অঙ্গশোভা
এসো, যুগল দুঃখগুলো অষ্টধাতুর জলে ধুয়ে দিইতারপর এর ওপর ছিটিয়ে দিই কর্পূরসুগন্ধ নিয়ে দুঃখগুলো সতেজ হলেবিছিয়ে দেব নতুনভাবে সময়ের উঠোনজুড়েসকাল-দুপুর-সন্ধ্যা গড়িয়ে মধ্যরাতেচাঁদের আলোয়নিশ্চয় এক দিন ওরা হেসে উঠবে।
গ্রাম থেকে নগর-মহানগরেছড়িয়ে আছে দুঃখের অশ্রুবিন্দুবলা ভালো, আমার স্বদেশের মানচিত্রজুড়েস্বপ্ন-সম্ভাবনার পালকগুলো ভিজিয়ে ভালোবাসার ঘৃতাঞ্জলিতেওড়াই আবার সজীব করে।
দেখো, আমাদের দুঃখগুলোকতটা নিঃস্বার্থ কিংবা নির্মোহএতকিছুর পরও ওরাই করেগোলাপের সোহাগ স্তম্ভিতআমরা পরস্পরের বুকে বুক রেখেব্যথার সমুদ্রে সাঁতার কেটে জেনেছিদুঃখের সঙ্গে দুঃখ মিশিয়ে নেবানো উনুন জ্বলেএ-ই কি দুঃখের অঙ্গশোভা নয়?
Advertisement
এসো, যুগল দুঃখগুলো অষ্টধাতুর জলে ধুয়ে দিইসব দুঃখের সংজ্ঞা হয় নাসব দুঃখ যায় না করা প্রকাশওদুঃখকে কখনো কখনো বাজাতে দিতে হয়তার নিপুণ খোল-করতালস্বপ্নের পালঙ্কে দুঃখগুলোআপাতত ঘুমিয়ে থাকুক।
অন্ধ ভালোবাসার গন্ধ নিয়ে দুঃখ ওড়াক তার গাণ্ডীব জীবনে সুখ-দুঃখ সবই আপেক্ষিকতবে প্রথম দুঃখ নাকি খুব কষ্টের যতই ভালোবাসবে দুঃখ ততই আঁকড়ে ধরবেআমাদের তো কাউকে দুঃখ দেবার কথা নয় এসো, যুগল দুঃখগুলো অষ্টধাতুর জলে ধুয়ে দিইদুঃখগুলোয় কর্পূর ছিটাই।
তোমাতে বিলীন
কী বিস্ময়করভাবে তোমার আনন্দের ভেতর অনর্গল কথা বলছে আর্তনাদ কখনও কখনও আর্তনাদের ভেতরেঅপার শান্তির ছায়াও দেখেছিআবার এও দেখেছি, এই শান্তির ভেতরেই বইছে সমুদ্রের সাঁইসাঁই ঝড়আহারে, আহা; মানুষের জীবন-খতিয়ানে কত আঁকিবুঁকি!
তুমি নিশ্চয় জানো সিসিফাসের সেই গল্পটাগ্রিক পুরাণের গল্প, যা হোমারের অডিসিতে আছেসিসিফাস বেচারা একটা খাঁড়া পাথর পাহাড়ের ওপরে ঠেলে তোলে, আর পাথরটা গড়িয়ে নিচে পড়ে আবার পাথরটাকে ঠেলে ওপরে তোলে যতবার তোলে, ততবার পড়ে, কিন্তু সে বিরতি দেয় না তার অবিরাম এই একটা কাজপাথর ঠেলে পাহাড়ের চূড়ায় তোলাআর সেটা গড়িয়ে নিচে পড়লে আবার ঠেলতে থাকা।
কোনো কোনো দুঃখ অন্ধকার ঘুচিয়ে আলোর প্লাবন ঘটায় অন্তর্লোকের আগুন ছড়ায় অনন্ত দিগন্তব্যাপী অনন্ত কণ্ঠে শুনি তোমার উদার আকাশের জয়গান তুমি তো নিষ্ফলা নও, জীবনের সবকিছু দৃশ্যমান হয় না অতি ক্ষুদ্র দীন আমি শুধু এটুকু জানি নিজেকে নিঃশেষ করে অনেককে অশেষ করেছো ওগো ত্যাগের সৌরভধারী, তোমার অনন্ত কল্লোলে দুঃখ চাষিদের দুঃখ তোমাতেই হোক বিলীন।
এইচআর/জিকেএস