দেশজুড়ে

মুহুরী-কহুয়া নদীর তিন স্থানে ভাঙন, ১০ গ্রাম প্লাবিত

ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে পানি ঢুকে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ও লোকালয়ে। অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্রতিবছর ফেনীর সীমান্তবর্তী উপজেলা ফুলগাজী ও পরশুরামে নদী ভাঙনের শিকার হন স্থানীয় জনগণ। টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় নষ্ট হয় ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট ব্রিজ-কালভার্ট ও বসতঘর।

Advertisement

গত তিন-চার দিনের দিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ফুলগাজী সদরের উত্তর বরইয়া, উত্তর দৌলতপুর এবং পরশুরাম উপজেলার অলকা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।

ফুলগাজীর দুটি স্থানে নদী ভাঙনে আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলার একটি স্থানে ভাঙনে দুইটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার কবলে পড়ার আতঙ্কে আছে বাঁধের পাশের এলাকার শতশত পরিবার।

স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় কুমার বলেন, বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বাড়ার ফলে জেলার সীমান্তবর্তী এ দুই উপজেলায় নদীর ভাঙন দেখা দেয়। এতে মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। প্রশাসন এই সময় আমাদের জন্য সামান্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে আসে। এতে আমাদের কোনো উপকারই হয় না। আমরা চাই এই মুহুরী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ স্থায়ীভাবে মেরামত হোক।

Advertisement

আরেক বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদী বাঁধ ভাঙন আমাদের প্রতিবছরের দুর্ভোগের কারণে পরিণত হয়েছে। আমাদের সাময়িক ত্রাণ এবং সান্ত্বনা না দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক।

ফুলগাজী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কে এইচ এম মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ বন্যায় ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় প্রায় ১২০ হেক্টর রোপা আমন এখন পানির নিচে রয়েছে। প্রায় ১০ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে রয়েছে। এছাড়া সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি থাকায় এখনো ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ হয়নি। পানি কমলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, নিরীক্ষণ শেষে টেকসই বাঁধ মেরামতের জন্য ৭৩১ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। নদীর পানির প্রবাহ কিছুটা কমলে ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হবে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, আমি সরেজমিনে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য দুই লাখ টাকা ও সাড়ে তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। পানিবন্দি মানুষের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Advertisement

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমআরআর/এমএস