দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছর এবং তার স্ত্রী সাবেরা আমানের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়ে ঘোষিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, রায়ের অনুলিপি পৌঁছানোর ১৫ দিনের মধ্যে আমান দম্পতিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
Advertisement
সোমবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে ২৮১ পৃষ্ঠার প্রকাশিত রায়ে এ নির্দেশনা এসেছে।
এর আগে গত ৩০ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে আদেশ দেন। ওইদিন দুদকের অন্য একটি মামলায় বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন>> টুকু-আমানের আপিল খারিজ, সাজা বহাল
Advertisement
ওইদিন আদালতে আমান ও তার স্ত্রীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং টুকুর পক্ষে ছিলেন আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লা মামুন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছর ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে এ দম্পতি রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল আবেদন মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে মামলাটির পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে পুনঃশুনানি শেষ হয়। পরে গত ৩০ মে হাইকোর্ট এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: আমান ও তার স্ত্রীর সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় আজ
Advertisement
অন্যদিকে ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে ২০০৭ সালের মার্চে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। কমিশনের উপ-পরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূঞা ওই বছরের ২৮ জুন মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে মামলার পুনঃশুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। পুনঃশুনানি শেষে গত ৩০ মে টুকুর সাজা বহাল রাখেন আদালত।
পরে আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে টুকু আবেদন করলে সর্বোচ্চ আদালতে তা খারিজ হয়ে যায়।
এফএইচ/এমকেআর/এএসএম