যমুনা নদীর বুক চিরে নির্মিত হচ্ছে দেশের মেগা প্রকল্পের অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। রাত-দিন দেশি বিদেশি প্রকৌশলী ও কর্মীদের পরিশ্রমে এগিয়ে চলেছে এ কর্মযজ্ঞ। মূল সেতুর ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে যমুনার বুকে এখন দৃশ্যমান ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশের যমুনা নদীর দু’প্রান্তে দুটি প্যাকেজে নির্মিত হচ্ছে এই রেল সেতু। এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু। যথাসময়ে কাজ শেষ করা গেলে এ সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে ২০২৪ সালে। তখন উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহনে আরও গতি আসবে।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সাব স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম জাগো নিউজকে বলেন, এ সেতুতে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার। এরইমধ্যে ৩১টি পিলার বসানো হয়েছে। বাকি ১৯টি বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। স্প্যান বসানো হয়েছে ২২টি।
Advertisement
প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দুটি প্যাকেজের ডব্লিউডি-১ টাঙ্গাইল অংশে ৭৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ ও ডব্লিউডি-২ সিরাজগঞ্জ অংশে ৫৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ সেতু এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়েছে ৬৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ৭ হাজার ৩৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক কাজ করছেন। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারে। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু চালু হওয়ার পর ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। রেল থামিয়ে বসে থাকতে হবে না। কারণ এটি ডবল লাইনের হওয়ায় একইসঙ্গে একাধিক ট্রেন চলতে পারবে। এতে এ অঞ্চলে ব্যবসার প্রসার ঘটবে।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, নির্ধারিত সময়েই সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। এজন্য দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী আর কর্মীরা রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।
এফএ/এএসএম
Advertisement