বরগুনায় চারদিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিঘ্ন ঘটছে প্রায় সব মানুষের দৈনন্দিন কাজে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (৬ আগস্ট) বিকেলে জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক ও আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মো. মাহাতাব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনার প্রধান তিন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পানি প্রবাহ কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বৈরি আবহাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ৬৮.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড
Advertisement
সদর উপজেলার পতাকাটা ইউনিয়নের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, কয়দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টিতে গাড়ি চালাতে পারিনি। ছেলে মেয়ের প্রাইভেটের টাকা দেওয়ার সময় এসেছে। এখন পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
তালতলী উপজেলার বড় আম খোলার মো. সাব্বির বলেন, কয়দিন থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। আমার পুকুরসহ এলাকার অনেকের মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এরপর বৃষ্টি হলে আর মাছ ঘেরে বা পুকুরে রাখা সম্ভব হবে না।
সদর উপজেলার ১০ নম্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা এমবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুমেও মাছ শিকার করতে পারছি না বৈরি আবহাওয়ার কারণে। বঙ্গোপসাগর এতটাই উত্তাল, সাগরে ট্রলার নিয়ে টিকে থাকাই দায়।বাংলাদেশের ট্রলারগুলো ভারতের ট্রলারের তুলনায় ছোট সাইজের। তাই উত্তল সাগরে টিকে থাকা দায়।
বেতাগী উপজেলার তুলাতুলি এলাকার কৃষক মো. আনোয়ার বলেন, আমি আমনের জন্য দুই একর জমিতে বীজতলা করেছি। বৃষ্টিতে হালচাষ করতে পারিনি। এখন পানির যে চাপ। জমির সব বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। এখন নতুন করে বীজ করারও সময় নাই।
Advertisement
আরও পড়ুন: ভোলায় জোয়ারের পানিতে ১৫ গ্রাম প্লাবিত
জেলেদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ১ আগস্ট সকাল থেকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে উত্তাল হতে থাকে সাগর। ওইদিনই জেলেরা তীরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রায় পাঁচ হাজার ট্রলার পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, এ বৃষ্টি আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। বরগুনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
জেএস/জেআইএম