আফগানিস্তানের কয়েকটি প্রদেশে ১০ বছরের বেশি বয়সী মেয়ে শিশুদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে তালেবান সরকার। বিষয়টিকে নারী অধিকারের ওপর আরও কঠোর আঘাত বলে দাবি করছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি পার্সিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, গজনি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্কুল প্রধান ও স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের প্রশিক্ষকদের জানিয়ে দিয়েছেন, যেসব মেয়ের বয়স ১০ বছরের ওপরে, তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে পারবে না।
তাছাড়া তৃতীয় শ্রেণির ঊর্ধ্বে পড়া মেয়েদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানদের। স্কুল প্রধানদের প্রতি এ অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির প্রচার ও নির্দেশনা মন্ত্রণালয়, যা আগে নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় হিসেবে পরিচিত ছিল।
পূর্ব আফগানিস্তানের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলে, আমাদের বলা হয়েছে, যেসব মেয়েরা লম্বা ও যাদের বয়স ১০ বছরের বেশি তাদের স্কুলে প্রবেশের অনুমতি নেই।
Advertisement
গত বছরের ডিসেম্বরে তালেবান সরকার নারীদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করে। তখন তালেবানের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী নেদা মোহাম্মদ নাদিম সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছিলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নারীশিক্ষা স্থগিতের আদেশ অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য বলা হলো। এ সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘ।
নারীরা কঠোর পোশাক পরিধান ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুরুষ সঙ্গী নিয়ে আসার নিয়ম উপেক্ষা করে বিধায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করে তালেবান। তারা আরও দাবি করে, বেশিরভাগ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকেই নারী–পুরুষের জন্য আলাদা প্রবেশপথ, শ্রেণিকক্ষ ও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু বয়স্ক পুরুষ বা নারী অধ্যাপক নিযুক্ত রাখার নীতি ছিল।
২০২১ সালে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই নারীদের ওপর শিক্ষাসহ আরও নানাবিধি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকে তালেবান সরকার। দেশটিতে এখন নারীদের বিনোদনকেন্দ্র, জিম, মেলা, সেলুনে যাওয়া নিষিদ্ধ ও জনসম্মুখে যেতে হলে ইসলামে দেওয়া পর্দার বিধান যথাযথভাবে মানতে হয়। নির্দেশনা না মানায় এরই মধ্যে অনেক নারীকে সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
Advertisement
এসএএইচ