খেলাধুলা

আরেকটি হাইভোল্টেজ ম্যাচ দেখার অপেক্ষা

ভারত-পাকিস্তানের হাইভোল্টেজ ম্যাচ। ক্রিকেটে এ দু’দল মুখোমুখি হওয়া মানেই সবসময় হাইভোল্টেজ। সেটা বিশ্বকাপ কিংবা অন্য কোন টুর্নামেন্ট হোক অথবা কোন সিরিজ হোক, হাইভোল্টেজ হবেই। যেন ক্রিকেটের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াই। ভারতের কাছে এই ম্যাচটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে, কারণ প্রথম ম্যাচ হেরে তারা অনেকটাই ব্যাকফুটে। এই ম্যচ দিয়ে ফিরে আসতে হবে। যদিও পরস্পর বিপরীতমুখী দুটি ইতিহাস আজ কাজ করছে দুটি দলের সামনেই। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে দুই ফরম্যাটের বিশ্বকাপে দু’দল পরস্পর মুখোমুখি হয়েছে ১০ বার। প্রতিবারই হেরেছে পাকিস্তান। ব্যবধানটা ১০-০। আবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দু’দল মুখোমুখি হয়েছে ৪ বার। প্রতিবারই পাকিস্তানের কাছে হেরেছে ভারত। যদিও ইডেনের এই ম্যাচগুলো ছিল বিশ্বকাপের বাইরের ম্যাচ। সুতরাং, দু’দলের সামনেই আজ ইতিহাস বদালানোর মিশন। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এক দল ইতিহাস বদলাবেই। এটা নিশ্চিত। সেই দল কোনটি? ভারত না পাকিস্তান?বিশ্বকাপে টিকে থাকার জন্য এই ম্যাচটি ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের কাছে আজ যদি হেরে যায় তারা, তাহলে বিশ্বকাপের গ্রপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরী হয়ে যাবে ধোনিদের । অথ্যাৎ মাস্ট উইন গেম তাদেরও জন্য। সে ক্ষেত্রে কাজটা যে খুবই কঠিন এটা ভারতীয়রা ভালোকরেই জানে।  কারণ, এই ইডেনেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছে পাকিস্তান। ব্যাটসম্যানরা রানে ফিরেছে। বোলাররা ভালো বল করেছে। ধারাবাহিকতা থাকলে নিশ্চিত ভারতকে আজ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।এই ম্যাচে চোখ রাখার জন্য বলব আফ্রিদির ওপর। এমনিতেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসলে আফ্রিদি যেন ফর্ম ফিরে পান। তারপরও ভারতের মাটিতে তিনি দুর্দান্ত খেলেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৯ বলে করেছেন ৪৯ রান। উইকেটও নিয়েছেন ২টি। পাকিস্তানকে যদি জিততে হয়, তাহলে আফ্রিদির পারফরম্যান্সের খুবই দরকার। না হয় ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় অসম্ভব।একই সঙ্গে বলব, মোহাম্মদ আমিরের ওপর চোখ রাখতে। কারণ, বোলিংয়ে দারুণ শুরু করাটা প্রয়োজন। ভারতের সবগুলো ব্যাটসম্যানই ভালো ফর্মে রয়েছে। এ কারণে আমিরের চারটা ওভার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতেই যদি একটা ধাক্কা দিতে পারেন, তাহলে সেটা হবে পাকিস্তানের জন্য প্লাস পয়েন্ট।ভারতের জন্য কী ফ্যাক্টর হতে পারে বিরাট কোহলি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সব সময়ই তার ব্যাট সরব। পাকিস্তানকে পেলেই যেন জ্বলসে ওঠার চেষ্টা করেন। কোহলির কাছেই বেশ কয়েকবার হেরেছে পাকিস্তান। আজও ভারতকে জিততে হলে কোহলিকে রান করতে হবে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বোলিংয়ের সামনে দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শেখর ধাওয়ানের টিকে থাকাটাও জরুরী। তাদের ওপরও দায়িত্ব অনেক। আর শেষ দিকে গিয়ে ধোনিকে বিধ্বংসী হতে হবে। তবেই ভারতের জয়ের সম্ভাবনা তৈরী হবে। মোট কথা, ইতিহাস বলুন আর ঐতিহ্য বলুন, ভারত-পাকিস্তান মানেই চরম একটি খেলা। এর সঙ্গে যদি পারিপাশ্বিক আরও কিছু কার্যকারণ যোগ হয়, তাহলে তো কথাই নেই। নিশ্চিতভাবেই একটি হাইভোল্টেজ ম্যাচ। সেই ম্যাচটি দেখার অপেক্ষাতেই থাকলাম। লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কআইএইচএস/এমআর/এমএস

Advertisement