করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে ভিসা ও আবাসন নীতিমালা শিথিল করেছে চীন। এখন থেকে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে চীনে ভ্রমণ করা বিদেশিরা খুব সহজেই দেশটির ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ পেয়ে যাবেন। তাছাড়া দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের নাগরিকরাও কোনো সমস্যা ছাড়াই শহরাঞ্চলে বসবাস করতে পারবে।
Advertisement
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে দেশটির জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের জনগণ ও যানবাহনের সহজ চলাচলের পাশাপাশি, তথ্য ও ডাটার সহজ আদান-প্রদান নিশ্চিতে নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে। করোনা মহামারি সংক্রান্ত কঠোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর চীনের অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তা আবার ঝিমিয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের কাছে গোপন তথ্য সরবরাহ, দুই মার্কিন নৌ সদস্য গ্রেফতার
বিশেষ করে, নাগরিক পর্যায়ে ভোগের চাহিদা কমে যাওয়া ও আবাসন ব্যবসা লোকসানের মুখে পড়ায় প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জানা যায়, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে বেকারত্বের হার ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
Advertisement
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় ২৬টি নতুন উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আগত বিদেশিদের জন্য সহজ ভিসানীতিও রয়েছে। এখন থেকে বাণিজ্য লেনদেন, এক্সপো, সম্মেলনে যোগদানসহ বিনিয়োগের জন্য যারা চীনে আসা বিদেশি ব্যক্তিরা খুব সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে এজন্য নির্দিষ্ট নথি দেখাতে হবে। এর আগে চীনে ভ্রমণের জন্য চীনা দূতাবাস বা কনস্যুলেটে ভিসা আবেদন করতে হতো।
আরও পড়ুন: মোটা হয়ে যাচ্ছিলেন, তাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লেন তরুণী!
এদিকে, স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার যে নীতিমালা সেটিও শিথিল করার কথাও জানিয়েছে জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়। এটি ‘হুকউ’ নামে পরিচিত। যেখানে কয়েক দশক ধরে চীনের অধিবাসীদের ‘শহুরে’ বা ‘গ্রামীণ’ নামে আখ্যা দেওয়া হচ্ছিল। তবে এখন থেকে চীনের অধিবাসীরা দেশের যেকোনো স্থানে বসতি স্থাপন, বসবাস ও কাজ করতে পারবে।
২০২০ সালের মার্চে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণার পর অন্যান্য দেশের মতো চীনও লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রভৃতি কঠোর সব নীতি প্রয়োগ করেছিল। তবে ২০২১ সালের শুরু থেকে মাঝামাঝির মধ্যে অধিকাংশ দেশ এসব বিধিনিষেধ শিথিল করলেও চীন সেগুলো বহাল রেখেছিল।
Advertisement
আরও পড়ুন: নতুন উত্তেজনায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র
২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত করোনা সংক্রান্ত কঠোর নীতি চালু রাখে দেশটি। আর এটিকেই চীনের প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
এসএএইচ