কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার জলম ইউনিয়নের সিংগুরে সাহস কালচারাল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১ টায় সমবেত জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘সাহস’র প্রতিষ্ঠাতা লেখক-প্রকাশক নাজমুল হুদা রতন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ‘সাহস’র প্রধান সমন্বয়কারী সবুর বাদশা। তিনি উপস্থিত অতিথিবৃন্দসহ উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান।
Advertisement
তিনি বলেন সাহস প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস সমূহ পালন ছাড়াও স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ছড়া কবিতা পাঠ, গান, নৃত্য, চিত্রাংকন নিয়মিতভাবে করে থাকে। তিনি কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির তবলা প্রশিক্ষক কামাল আহমেদ ও সংগীত প্রশিক্ষক মঞ্জিল স্যারের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। এই দুজন গুণী মানুষ সাহসের সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি আরও বলেন সাহস কালচারাল সেন্টার শুরুর মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বহুদূর এগিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: হাবিব মোস্তফার কথা ও সুরে ইভার কণ্ঠে রাগাশ্রয়ী গান
এরপর বক্তব্য রাখেন শিক্ষানুরাগী হরিপদ দে বাচ্চু, সাংস্কৃতিক কর্মী হরিপদ দেবনাথ, সাহস স্কুলের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াছিন। বক্তারা সাহস কালচারাল সেন্টারের যাত্রা শুভ হোক এই কামনা করে বলেন। সাহস শিক্ষায় দীক্ষায় জনসচেতনতায় সমাজ উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ জন্য বক্তারা সাহস এর উদ্যোক্তা নাজমুল হুদা রতনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
Advertisement
বক্তারা বলেন সংস্কৃতি একটি জাতির দর্পণ তাই একটি সুন্দর সমাজ গঠনে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা অনিবার্য। আজ সাহসে যারা প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য চট্রগ্রাম ও কুমিল্লা শহর থেকে দুজন এসেছেন তাদের এই সম্পৃক্ততাই বলে দেয় এই দুজন কতটা সাংস্কৃতিকমনা মানুষ। বক্তারা সাহস কালচারাল সেন্টারের সাফল্য কামনা করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সংগীত প্রশিক্ষক চট্রগ্রামের বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক মো. শাহাবুদ্দীন ও তবলা প্রশিক্ষক সত্য চন্দ্র মোদক বলেন, সংস্কৃতি চর্চা একজন মানুষের মনকে পরিশুদ্ধ করে। প্রজন্মকে সাংস্কৃতিক মনস্ক করে গড়ে তুলতে পারলেই আমরা এগিয়ে যাবো সম্প্রীতির বন্ধনে।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে সাহস কালচারাল সেন্টার উদ্বোধন করেন সিংগুর সুধী সংঘের সভাপতি ইদ্রিস মিয়া। তিনি বলেন, এলাকায় এক সময় নানান গানের আয়োজনসহ যাত্রাপালা বা নাটক মঞ্চায়ন হয়েছে। অতি আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমাদের সেই আনন্দঘন স্মৃতিময় দিনগুলোকে হারিয়ে ফেলেছি।
তিনি আরও বলেন, গ্রামে এখন সাংস্কৃতিক চর্চা খুব একটা নেই বললেই চলে। সাহস কালচারাল সেন্টার উদ্বোধন বা শুরু করাটা খুবই জরুরি ছিলো। আমরা আমাদের প্রজন্মকে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের কোমল প্রাণের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে পারলেই শিক্ষার্থীদের মজবুত ভিত গড়ে উঠবে। আমরা এমনটিই চাই।
Advertisement
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে ‘সাহস’র প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদা রতন উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শিশুদের মেধা বিকাশে সাহস সবসময়ই যত্নবান। আমরা প্রতিনিয়ত শিশুদের যেমন পাঠদান করাই তেমনি তাদের প্রতিভা বিকাশে নানান আয়োজন করে থাকি। সাহস কালচারাল সেন্টার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সাহসের আরও একটি নতুন যাত্রাপথের সূচনা হলো। তিনি বিশেষভাবে চট্রগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে আগত প্রশিক্ষকবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সাহসের সাথে থাকার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, এরপর সাহস লাইব্রেরিতে ভর্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচয় পর্ব শেষে প্রশিক্ষবৃন্দ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেন। এখন থেকে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ চলবে। এখানে সাহস স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীও রয়েছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাহস স্কুলের সহকারী শিক্ষক সুমিত্রা রানী দে। সহযোগী ছিলেন সকল শিক্ষকবৃন্দ।
এমএমএফ/এএসএম