দেশজুড়ে

ত্রাণের ঘর, তাও গেলো নদীতে

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও নদীর পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিলীন হয়েছে বসতি ঘর, সৃজিত গাছ, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাটসহ আবাসিক এলাকার কয়েক একর জমি। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব ভাঙন কবলিতরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকালে বৃদ্ধা দুধ মেহেরের ঘরটি ভাঙনে নদীগর্ভে চলে যায়। এরপর থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এ বৃদ্ধা।

দুধ মেহের বলেন, ‘নদীতে সবকিছু ভাঙতে ভাঙতে শেষ হয়ে গেলো। স্বামীর বাড়ির জায়গা শেষ হলে নানা শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া জায়গায় খুপরি বানিয়ে থাকতাম। ২০০৭ সালের সিডরে তাও উড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে সরকার একটি ত্রাণের ঘর দেয়। দুই লাখ টাকার ঘরে থাকতে কিস্তি উঠিয়ে আরও দেড় লাখ টাকা খরচ করে বারান্দা দিয়ে রইছি।’

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঘরের মধ্যে ঘুমে ছিলাম। এলাকার লোকজনে চিল্লাচিল্লি করে আমারে উঠাইছে। আর বলছে, বুড়ি তোমার ঘর গেছে, তুমিও ডুইবা যাবা। তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসো। এই চিল্লাচিল্লি শুনে একটি কাঁথার গাট্টি নিয়ে বের হইছি। আর কিছু পাই নাই; সব শেষ হয়ে গেছে।’

Advertisement

দুধ মেহেরের প্রতিবেশী হাসি বেগম বলেন, ‘ঘর ভাঙার কড়কড় শব্দ শুনে আমরা গ্রামবাসী দৌড়ে এসে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করি। তবে অন্য কোনো মালামাল নিতে পারিনি। সব নদীতে চলে গেছে।’

মঠবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, বিষখালী নদীর ভাঙনে বাদুরতলা এলাকার বৃদ্ধার ঘর ও মল্লিকবাড়ি এলাকার রাস্তাসহ গাছপালা বিলীন হয়েছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলা হচ্ছে।

রাজাপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পের আওতায় দুধ মেহেরকে একটি ঘর দেওয়া হয়েছিল। এর আগে তিনি নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবারের ভাঙনে তার ঘরটিও বিলীন হয়ে গেছে বলে শুনেছি। তিনি পুনরায় আবেদন করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান বলেন, বাদুরতলা এলাকার দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। একটি বসতঘর ও বাগান বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Advertisement

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম নিলয় পাশা বলেন, নদীভাঙন রোধে ৮৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি গৃহীত হলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

আতিকুর রহমান/এসআর/এএসএম