দুই কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে সবকয়টি মূল্যসূচক। পাশাপাশি বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। একই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে পাঁচশ কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
Advertisement
এর আগে সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে পরের দুই কার্যদিবসে খাদ্য এবং তথ্য প্রযুক্তি বা আইটি খাতের কল্যাণে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। গত দুই কার্যদিবসের মতো আজও খাদ্য খাতের বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। খাদ্যের সঙ্গে বস্ত্র খাতেরও বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। কিন্তু অন্য খাতগুলোতে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে। কিন্তু প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে এই ধারা। এতে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকয়টি সূচক কমে শেষ হয় দিনের লেনদেন।
আরও পড়ুন: পর্ষদের পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, কাটছে না ডেল্টা লাইফের জটিলতা
Advertisement
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৬৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৮টির। আর ১৭৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৫৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৮ জুনের পর ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হলো।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফুয়াং ফুডের লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার। ১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
Advertisement
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রহিমা ফুড, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, খাদ ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, দেশবন্ধু পলিমার এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৭টির এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এমএএস/কেএসআর/জিকেএস