কলকাতায় ভয়ংকর শিশুপাচার চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা বলছেন, আইভিএফ সেন্টারের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল রমরমা শিশুপাচারের ব্যবসা। দালাল মারফত শিশু বিক্রি হয়ে কয়েক দফায় হাতবদলের পর পৌঁঝে যাচ্ছিল ক্রেতাদের কাছে। মোটা দামে শিশু কিনছিলেন নিঃসন্তান দম্পতিরা। এই চক্রের সন্দেহভাজন ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Advertisement
কিছুদিন আগে কলকাতার আনন্দপুর থানার নোনাডাঙা রেল কলোনি এলাকায় এক নারীর কন্যাসন্তান নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয় আনন্দপুর থানায়। তার তদন্তে নেমেই গোটা শিশুপাচার চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ।
জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে আনন্দপুর রেল কলোনিতে ভাড়া থাকছিলেন রূপালী মণ্ডল নামে এক নারী। তার সঙ্গে ছিল ২১ দিনের এক কন্যাশিশু, যাকে তিনি নিজের সন্তান বলে দাবি করেছিলেন। একদিন সকালে রূপালী শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও ফেরেন একা একাই।
বাচ্চাকে না দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। এ বিষয়ে রুপালীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা। কিন্তু ওই নারী সেসবের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
Advertisement
প্রতিবেশীদের দাবি, আমরা জিজ্ঞেস করলে রূপালী বলেন, জায়ের (স্বামীর বড় ভাইয়ে স্ত্রী) কোনো বাচ্চা নেই, তাই তার কাছে দিয়ে এসেছি। এসব শুনে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আনন্দপুর থানা পুলিশ। রুপালীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে পাচার চক্রের সন্ধান। এরপর একে একে আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী।
পুলিশ সূত্রে জানিয়েছে, ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) সেন্টারগুলোর আড়ালে কাজ করতো এই শিশুপাচার চক্র। নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে চার থেকে ছয় লাখ রুপির বিনিময়ে বিক্রি করা হতো ছোট ছোট শিশুদের।
জানা গেছে, রুপালি মণ্ডল একটি আইভিএফ সেন্টারে আয়ার কাজ করতেন। দালালের সাহায্যে মেদিনীপুরের বাসিন্দা কল্যানি গুহ নামে এক নারীর কাছে ২১ দিনের শিশুটিকে বিক্রি করেছিলেন তিনি।
Advertisement
কল্যানী গুহ বিয়ের ১৫ বছর পরও নিঃসন্তান ছিলেন। এ কারণে শিশুর খোঁজ করছিলেন তিনি। এরপর দালাল মারফত খোঁজ পান রূপালির। কলকাতার বেহালার পর্ণশ্রীতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন কল্যানি গুহ। তাকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিডি/কেএএ/